মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৫১০২
১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব
৫১০২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আবু বকর (রাঃ)-কে গালি দিল। এই সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসা ছিলেন এবং আশ্চর্যান্বিত হইয়া মৃদু হাসিতেছিলেন। লোকটি যখন আরও বেশী গালি দিতে লাগিল তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) তাহার কোন কোন কথার প্রতিবাদ করিলেন। ইহাতে নবী (ﷺ) রাগান্বিত হইয়া উঠিয়া চলিয়া গেলেন। তখন আবু বকরও তাঁহার পিছনে পিছনে গেলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে আমাকে গালি দিতেছিল তখন তো আপনি বসা ছিলেন। আর যখন আমি তাহার কোন কোন কথার প্রত্যুত্তর করিলাম তখন আপনি রাগ করিয়া উঠিয়া আসিলেন ? তিনি বলিলেনঃ তোমার সাথে একজন ফিরিশতা ছিলেন, যিনি ঐ লোকটির জওয়াব দিতেছিলেন। আর যখন তুমি নিজেই তাহার উত্তর দিতে লাগিলে তখন তোমাদের মাঝে শয়তান ঢুকিয়া গেল। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ হে আবু বকর! এমন তিনটি ব্যাপার আছে যে, উহার প্রত্যেকটি অকাট্য সত্য। (১) যেই বান্দার উপর কোন প্রকার যুগ্ম করা হয়, আর সে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উহার কোনই প্রতিবাদ করে না, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার সম্মান বৃদ্ধি করেন এবং তাহার সাহায্য করেন। (২) যে ব্যক্তি আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে দানের দ্বার উন্মুক্ত করিয়া দেয়, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার ধন-সম্পদ আরও বৃদ্ধি করিয়া দেন। (৩) যে ব্যক্তি ভিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করে এবং ইহার দ্বারা ধন-সম্পদ বৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা রাখে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা ইহার কারণে উহা আরও কমাইয়া দেন। – আহমদ
وَعَنْهُ
أَنَّ رَجُلًا شَتَمَ أَبَا بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ يَتَعَجَّبُ وَيَتَبَسَّمُ فَلَمَّا أَكْثَرَ رَدَّ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ فَغَضِبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ فَلَحِقَهُ أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَانَ يَشْتُمُنِي وَأَنْتَ جَالِسٌ فَلَمَّا رَدَدْتُ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ غَضِبْتَ وَقُمْتَ. قَالَ: «كَانَ مَعَكَ مَلَكٌ يَرُدُّ عَلَيْهِ فَلَمَّا رَدَدْتَ عَلَيْهِ وَقَعَ الشَّيْطَانُ» . ثُمَّ قَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ ثَلَاثٌ كُلُّهُنَّ حقٌّ: مَا منْ عبدٍ ظلم بمظلمة فِي غضي عَنْهَا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا أَعَزَّ اللَّهُ بِهَا نَصْرَهُ وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ عَطِيَّةٍ يُرِيدُ بِهَا صِلَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا كَثْرَةً وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ يُرِيدُ بِهَا كَثْرَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا قِلَّةً . رَوَاهُ أَحْمد
أَنَّ رَجُلًا شَتَمَ أَبَا بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ يَتَعَجَّبُ وَيَتَبَسَّمُ فَلَمَّا أَكْثَرَ رَدَّ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ فَغَضِبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ فَلَحِقَهُ أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَانَ يَشْتُمُنِي وَأَنْتَ جَالِسٌ فَلَمَّا رَدَدْتُ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ غَضِبْتَ وَقُمْتَ. قَالَ: «كَانَ مَعَكَ مَلَكٌ يَرُدُّ عَلَيْهِ فَلَمَّا رَدَدْتَ عَلَيْهِ وَقَعَ الشَّيْطَانُ» . ثُمَّ قَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ ثَلَاثٌ كُلُّهُنَّ حقٌّ: مَا منْ عبدٍ ظلم بمظلمة فِي غضي عَنْهَا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا أَعَزَّ اللَّهُ بِهَا نَصْرَهُ وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ عَطِيَّةٍ يُرِيدُ بِهَا صِلَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا كَثْرَةً وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ يُرِيدُ بِهَا كَثْرَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا قِلَّةً . رَوَاهُ أَحْمد
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মন্দের প্রতিশোধ সমপরিমাণ মন্দের দ্বারা দেওয়ার অনুমতি আছে, তবে ধৈর্যধারণ করা উত্তম। আর সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিলে কোন দিনই তাহার অভাব ঘুচে না। ইহাই ‘সম্পদ হ্রাস' হওয়া। আর “প্রতিবাদ করিতে থাকিলে তখন তাহাদের মাঝে শয়তান আসিয়া উপস্থিত হয়” ইহার অর্থ হইল, তাহাদের মধ্যে বিবাদ কিভাবে বৃদ্ধি পায় সেই ব্যবস্থা হইতে থাকে, অবশেষে তাহা খুনাখুনি পর্যন্ত গিয়া পৌঁছে। কাজেই যেখানে শয়তানের হস্তক্ষেপ ঘটিয়াছে, সেখান হইতে আল্লাহর নবী প্রস্থান করিতে বাধ্য হইয়াছেন।
