আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ

আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ

হাদীস নং: ২০৩
১০৩- দাস যখন মনিবের মঙ্গল কামনা করে
২০৩. এক ব্যক্তি আমের শা'বীকে লক্ষ্য করিয়া বলিল: হে আম্‌রের পিতা! আমরা পরস্পর বলাবলি করিয়া থাকি যে, যখন কোন ব্যক্তি সন্তানদাত্রী দাসীকে মুক্তি দেয় এবং অতঃপর তাহাকে বিবাহ করে, তখন সে যেন কুরবানীর পশুকে বাহনরূপে ব্যবহারকারী সদৃশ কাজ করিল। ( এ ব্যাপারে আপনার মত কি ? ) তখন আমের বলিলেন, আবু বুরদা আমেরের নিকট তদীয় পিতার প্রমুখাৎ বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহাদের নিকট ফরমাইয়াছেন, তিন ব্যক্তির জন্য দুইটি করিয়া পারিশ্রমিক রহিয়াছে: ১. আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের ঐ ব্যক্তি যে, তাহার স্বীয় নবীর প্রতি ঈমান আনিয়াছে, আবার মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর প্রতিও ঈমান আনয়ন করিয়াছে, তাহার জন্য দুইটি পারিশ্রমিক রহিয়াছে। ২. ক্রীতদাস যখন আল্লাহর হক এবং তাহার মনিবের হক আদায় করে। ৩. ঐ ব্যক্তি যাহার কাছে একটি দাসী ছিল, সে তাহাকে শয্যাসঙ্গিনী করিল, তাহাকে উত্তমরূপে আদব - কায়দা শিক্ষা দিল এবং উত্তমরূপে শিক্ষা দীক্ষা দিল, অতঃপর তাহাকে মুক্ত করিয়া বিবাহের মাধ্যমে জীবন - সঙ্গিনীরূপে বরণ করিল। তাহার জন্যও দুইটি পারিশ্রমিক রহিয়াছে। আমের বলেনঃ আমি তো তোমাকে উহা কোনরূপ বিনিময় ব্যতিরেকেই প্রদান করিলাম, ইহার চাইতে ছোট কথা শিখিবার জন্যও লোককে ইতিপূর্বে মদীনা পর্যন্ত সফর করিতে হইত।
بَابُ إِذَا نَصَحَ الْعَبْدُ لِسَيِّدِهِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ‏:‏ أَخْبَرَنَا الْمُحَارِبِيُّ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ حَيٍّ قَالَ‏:‏ قَالَ رَجُلٌ لِعَامِرٍ الشَّعْبِيِّ‏:‏ يَا أَبَا عَمْرٍو، إِنَّا نَتَحَدَّثُ عِنْدَنَا أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا أَعْتَقَ أُمَّ وَلَدِهِ ثُمَّ تَزَوَّجَهَا كَانَ كَالرَّاكِبِ بَدَنَتَهُ، فَقَالَ عَامِرٌ‏:‏ حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ‏:‏ قَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم‏:‏ ثَلاَثَةٌ لَهُمْ أَجْرَانِ‏:‏ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ آمَنَ بِنَبِيِّهِ، وَآمَنَ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَلَهُ أَجْرَانِ‏.‏ وَالْعَبْدُ الْمَمْلُوكُ إِذَا أَدَّى حَقَّ اللهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ‏.‏ وَرَجُلٌ كَانَتْ عِنْدَهُ أَمَةٌ يَطَأهَا، فَأَدَّبَهَا فَأَحْسَنَ تَأْدِيبَهَا، وَعَلَّمَهَا فَأَحْسَنَ تَعْلِيمَهَا، ثُمَّ أَعْتَقَهَا فَتَزَوَّجَهَا، فَلَهُ أَجْرَانِ قَالَ عَامِرٌ‏:‏ أَعْطَيْنَاكَهَا بِغَيْرِ شَيْءٍ، وَقَدْ كَانَ يَرْكَبُ فِيمَا دُونَهَا إِلَى الْمَدِينَةِ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সদকায়ে জারিয়াঃ

সদকামাত্রই উপকারী ও বিরাট সওয়াবের কাজ। এর বহু প্রকার ও ধরন রয়েছে। কিছু সদকা আছে অস্থায়ী। যেমন কাউকে খাদ্যদ্রব্য দান করা। আর কিছু সদকা আছে স্থায়ী। যেমন মসজিদ নির্মাণ করা। এই প্রকার সদকাকে ‘সদকায়ে জারিয়া’ বলা হয়। সদকায়ে জারিয়া করলে মৃত্যুর পরও দানকারীর ‘সওয়াব-সঞ্চয়’ সমৃদ্ধ হতে থাকবে। এর স্রোতধারা তার ‘পুণ্য-তরি’কে চলমান রাখবে।

এখানে সদকায়ে জারিয়ার কিছু উদাহরণ উল্লেখ করছি :

১. মসজিদ নির্মাণ।

২. মকতব-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা।

৩. দ্বীনী পাঠাগার ও দ্বীনী কিতাবের ব্যবস্থা করা।

৪. ঈদগাহ বানানো।

৫. কবরস্থান করা।

৬. যে কোনো দ্বীনী কাজের জন্য জমি ওয়াফ্ক করা।

৭. এতীম ও অসহায় লোকদের বাসস্থান ও উপার্জনের ব্যবস্থা করা।

৮. রাস্তা ও পুল নির্মাণ করা।

৯. পানির ব্যবস্থা করা।

১০. ফলদার বৃক্ষ রোপণ করা।

১১. সরাইখানা তৈরি করা।

১২. সীমান্ত পাহারা দেওয়া ইত্যাদি। (সংগৃহীত)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
আল-আদাবুল মুফরাদ - হাদীস নং ২০৩ | মুসলিম বাংলা