আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৫৭
২০০৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আল্লাহ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- কে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। (সূরা নিসা ৪: ১২৫)
৩১২০। সাঈদ ইবনে তালীদ রু‘আইনী ও মুহাম্মাদ ইবনে মাহবুব (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তিনবার ব্যতীত কখনও কথাকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলেন নি। তন্মধ্যে দু’বার ছিল আল্লাহ প্রসঙ্গে। তার উক্তি “আমি অসুস্থ” (৩৭ঃ ৮৯) এবং তাঁর আবার এক উক্তি “বরং এ কাজ করেছে, এই তো তাদের বড়টি।” (২১ঃ ৬৩) বর্ণনাকারী বলেন, একদা তিনি (ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং (তাঁর পত্নি) সারা অত্যাচারী শাসকগণের কোন এক শাসকের এলাকায় এসে পৌঁছলেন।
(তা-ছিল মিসর) তখন তাকে (শাসককে) সংবাদ দেওয়া হল যে, এ এলাকায় একজন লোক এসেছে। তার সাথে একজন সর্বাপেক্ষা সুন্দরী মহিলা রয়েছে। তখন সে (রাজা) তাঁর (ইবরাহীম)- এর কাছে লোক পাঠাল। সে তাঁকে মহিলাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল, এ মহিলাটি কে? তিনি উত্তর দিলেন, মহিলাটি আমার বোন। তারপর তিনি সারার কাছে আসলেন এবং বললেন, হে সারা, তুমি আর আমি ছাড়া পৃথিবীর উপর আর কোন মু’মিন নেই। এ লোকটি আমাকে তোমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল। তখন আমি তাকে জানিয়েছি যে, তুমি আমার বোন। কাজেই তুমি আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন কর না।
এরপর (অত্যাচারী রাজা) সারাকে আনার জন্য লোক পাঠালো। তিনি (সারা) যখন তার (রাজার) কাছে প্রবেশ করলেন এবং রাজা তাঁর দিকে হাত বাড়ালো তখনই সে (আল্লাহর গযবে) পাকড়াও হল। তখন অত্যাচারী রাজা সারাকে বলল, আমার জন্য আল্লাহর নিকট দু‘আ কর, আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না। তখন সারা আল্লাহর নিকট দু‘আ করলেন। ফলে সে মুক্তি পেয়ে গেল। এরপর দ্বিতীয়বার তাকে ধরতে চাইলো। এইবার সে পূর্বের ন্যায় বা তার চেয়ে কঠিনভাবে (আল্লাহর গযবে) পাকড়াও হল। এবারও সে বলল, আল্লাহর কাছে আমার জন্য দু‘আ কর। আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না। আবারও তিনি দু‘আ করলেন ফলে সে মুক্তি পেয়ে গেল। তারপর রাজা তার কোন এক দারোয়ানকে ডাকল। সে তাকে বলল, তুমি তো আমার কাছে কোন মানুষ আননি। বরং এনেছ এক শয়তান।
তারপর রাজা সারার খেদমতের জন্য হাযেরাকে দান করল। এরপর তিনি (সারা) তাঁর (ইবরাহীম) কাছে আসলেন, তিনি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিলেন। তখন তিনি (নামায রত অবস্থায়) হাত দ্বারা ইশারা করে সারাকে বললেন, কি ঘটেছে? তখন সারা বললেন, আল্লাহ কাফির বা ফাসিকের চক্রান্ত তারই বক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছেন। (অর্থাৎ তাঁর চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছেন।) আর সে (রাজা) হাযেরাকে খেদমতের জন্য দান করেছেন।১ আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, “হে আকাশের পানির২ সন্তানগণ! এ হাযেরাই তোমাদের আদি মাতা।”
১. ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর উক্ত তিনটি উক্তি ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলার অর্থ এই- প্রথমটি দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মানসিক অসুস্থতা। আর দ্বিতীয়টির উদ্দেশ্য ছিল মূর্তি-পূজারীদেরকে বোকা সাজানো এবং স্ত্রীকে বোন বলে পরিচয় দেওয়ার উদ্দেশ্য ধর্মীয় সম্পর্ক। ২. আকাশের পানির দ্বারা ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)-এর বংশের পবিত্রতা বুঝানো হয়েছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন