কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা
হাদীস নং: ৩৯৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৩০
যে ব্যক্তি 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু' স্বীকার করে, তার হত্যা থেকে বিরত থাক
৩৯৩০। সুওয়াইদ ইবন সাঈদ (রাহঃ)...... ইমরান ইবন হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাফি ইব্ন আযরাক (রাযিঃ) এবং তাঁর সাথীরা (আমার নিকটে) এসে বললোঃ হে ইমরান! তুমি বরবাদ হয়ে গিয়েছো। তিনি বললেনঃ আমি ধ্বংস হইনি। তারা বললেনঃ হ্যাঁ, (তুমি বরবাদ হয়ে গিয়েছো)। তিনি বললেন, কিসে আমার, ধ্বংস ডেকে আনলো? তারা বললেনঃ মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
وَقَاتِلُوهُمْ حَتّٰى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلهِ
“ফিতনা দূরীভূত না হওয়া এবং গোটা দীন আল্লাহর জন্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের (কাফিরদের) বিরুদ্ধে লড়াই করবে।" তিনি বললেনঃ আমরা তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে লড়াই করেছি যে, আমরা তাদের নির্বাসন করে দিয়েছি এবং গোটা দীন আল্লাহর জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদি তোমরা চাও, তাহলে আমি তোমাদের কাছে একখানি হাদীস বর্ণনা করতে পারি, যা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি। তারা বললেনঃ তুমি কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে তা শুনেছো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। (ইমরান বললেনঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি মুসলমানদের একটি দলকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে অভিযানে পাঠালেন। মুসলমানরা তাদের মুখোমুখী হলো, তাদের সঙ্গে কঠিন সংঘর্ষে লিপ্ত হলো। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মুশরিকরা পরাজয় বরণ করে তাদের গর্দান দিয়ে দিল অর্থাৎ পেছনে পালাতে লাগলো। আমরা বন্ধুদের একজন বর্শা দ্বারা এক মুশরিকের উপর হামলা করলেন। যখন তিনি তাকে পাকড়াও করলেন, তখন সে বলতে লাগলোঃ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ إِنِّي مُسْلِمٌ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। নিশ্চয়ই আমি একজন মুসলিম)। তিনি তাকে ভর্ৎসনা করলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট সে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল। আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। একথাটি তিনি একবার মতান্তরে দুইবার বললেন। অতঃপর সে ব্যক্তি তাঁর নিকট তা বর্ণনা করলে, যা সে করেছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি তার পেট ছিড়ে দেখলে না কেন? তাহলে তো তার অন্তরের খবর জানতে পারতে? তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল। যদি আমি তার পেট ছিড়ে ফেলতাম, তাহলে কি তার অন্তরের বিষয় আমি জানতে পারতাম? তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি তার উচ্চারিত স্বীকৃতি কেন কবুল করলে না? আর তুমি তো তার অন্তরের খবর জানতে না। ইমরান (রাযিঃ) বললেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চুপ থেকে কিছুক্ষণ নীরবতা অবলম্বন করলেন। অবশেষে লোকটি মারা গেল। আমরা তার দাফন করলাম। প্রত্যুষে উঠে দেখলাম তার লাশ কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। তারা ভাবলেন, সম্ভবত: কোন দুশমনের কান্ড যে কবর খুঁড়ে একে বের করে রেখেছেন। অতঃপর আমরা তাকে আবার দাফন করলাম। আর আমাদের যুবকদের নির্দেশ দিলাম যে, তারা যেন তার কবর পাহারা দেয়। পরদিন ভোরবেলা দেখতে পেলাম তার লাশ কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। আমরা ভাবলাম, সম্ভবত: প্রহরীরা তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল (কোন শত্রু এসে তার লাশ বাইরে বের করে রেখেছে)। এরপর আমরা তাকে দাফন করলাম এবং নিজেরাই প্রহরার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। প্রত্যুষে দেখলাম, সে কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। অবশেষে আমরা তাকে কোন এক গিরিপথে রেখে দেই।
ইসমাঈল ইবনে হাফস আঈলী (রাহঃ)...... ইমরান ইবন হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদিগকে এক সারিয়া হতে (ক্ষুদ্র অভিযাত্রীদলকে সারিয়াহ বলা হয়) পাঠালেন। সেখানে জনৈক মুসলমান ব্যক্তি এক মুশরিকের উপর হামলা করেছিল। অতঃপর তিনি উপরোক্ত হাদীস (কিসসা) উল্লেখ করলেন। তিনি তার বর্ণনায় এতটুকু বাড়িয়ে বললেনঃ অতঃপর যমীন তাকে উৎক্ষিপ্ত করেছিল। অতঃপর নবী (ﷺ) এ খবর দেওয়া হলে তিনি বললেনঃ যমীন তো তার চাইতে নিকৃষ্টতর ব্যক্তিকেও কবুল করে (এমনকি কাফির-মুশরিকদেরকেও)। কিন্তু আল্লাহ তা'আলা তোমাদের দেখতে চান যে, 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর মযার্দা ও মাহাত্ম্য কত বেশী।
وَقَاتِلُوهُمْ حَتّٰى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلهِ
“ফিতনা দূরীভূত না হওয়া এবং গোটা দীন আল্লাহর জন্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের (কাফিরদের) বিরুদ্ধে লড়াই করবে।" তিনি বললেনঃ আমরা তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে লড়াই করেছি যে, আমরা তাদের নির্বাসন করে দিয়েছি এবং গোটা দীন আল্লাহর জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদি তোমরা চাও, তাহলে আমি তোমাদের কাছে একখানি হাদীস বর্ণনা করতে পারি, যা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি। তারা বললেনঃ তুমি কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে তা শুনেছো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। (ইমরান বললেনঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি মুসলমানদের একটি দলকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে অভিযানে পাঠালেন। মুসলমানরা তাদের মুখোমুখী হলো, তাদের সঙ্গে কঠিন সংঘর্ষে লিপ্ত হলো। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মুশরিকরা পরাজয় বরণ করে তাদের গর্দান দিয়ে দিল অর্থাৎ পেছনে পালাতে লাগলো। আমরা বন্ধুদের একজন বর্শা দ্বারা এক মুশরিকের উপর হামলা করলেন। যখন তিনি তাকে পাকড়াও করলেন, তখন সে বলতে লাগলোঃ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ إِنِّي مُسْلِمٌ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। নিশ্চয়ই আমি একজন মুসলিম)। তিনি তাকে ভর্ৎসনা করলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট সে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল। আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। একথাটি তিনি একবার মতান্তরে দুইবার বললেন। অতঃপর সে ব্যক্তি তাঁর নিকট তা বর্ণনা করলে, যা সে করেছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি তার পেট ছিড়ে দেখলে না কেন? তাহলে তো তার অন্তরের খবর জানতে পারতে? তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল। যদি আমি তার পেট ছিড়ে ফেলতাম, তাহলে কি তার অন্তরের বিষয় আমি জানতে পারতাম? তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি তার উচ্চারিত স্বীকৃতি কেন কবুল করলে না? আর তুমি তো তার অন্তরের খবর জানতে না। ইমরান (রাযিঃ) বললেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চুপ থেকে কিছুক্ষণ নীরবতা অবলম্বন করলেন। অবশেষে লোকটি মারা গেল। আমরা তার দাফন করলাম। প্রত্যুষে উঠে দেখলাম তার লাশ কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। তারা ভাবলেন, সম্ভবত: কোন দুশমনের কান্ড যে কবর খুঁড়ে একে বের করে রেখেছেন। অতঃপর আমরা তাকে আবার দাফন করলাম। আর আমাদের যুবকদের নির্দেশ দিলাম যে, তারা যেন তার কবর পাহারা দেয়। পরদিন ভোরবেলা দেখতে পেলাম তার লাশ কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। আমরা ভাবলাম, সম্ভবত: প্রহরীরা তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল (কোন শত্রু এসে তার লাশ বাইরে বের করে রেখেছে)। এরপর আমরা তাকে দাফন করলাম এবং নিজেরাই প্রহরার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। প্রত্যুষে দেখলাম, সে কবরের বাইরে যমীনে পড়ে আছে। অবশেষে আমরা তাকে কোন এক গিরিপথে রেখে দেই।
ইসমাঈল ইবনে হাফস আঈলী (রাহঃ)...... ইমরান ইবন হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদিগকে এক সারিয়া হতে (ক্ষুদ্র অভিযাত্রীদলকে সারিয়াহ বলা হয়) পাঠালেন। সেখানে জনৈক মুসলমান ব্যক্তি এক মুশরিকের উপর হামলা করেছিল। অতঃপর তিনি উপরোক্ত হাদীস (কিসসা) উল্লেখ করলেন। তিনি তার বর্ণনায় এতটুকু বাড়িয়ে বললেনঃ অতঃপর যমীন তাকে উৎক্ষিপ্ত করেছিল। অতঃপর নবী (ﷺ) এ খবর দেওয়া হলে তিনি বললেনঃ যমীন তো তার চাইতে নিকৃষ্টতর ব্যক্তিকেও কবুল করে (এমনকি কাফির-মুশরিকদেরকেও)। কিন্তু আল্লাহ তা'আলা তোমাদের দেখতে চান যে, 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর মযার্দা ও মাহাত্ম্য কত বেশী।
بَاب الْكَفِّ عَمَّنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ السُّمَيْطِ بْنِ السَّمِيرِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ قَالَ أَتَى نَافِعُ بْنُ الْأَزْرَقِ وَأَصْحَابُهُ فَقَالُوا هَلَكْتَ يَا عِمْرَانُ قَالَ مَا هَلَكْتُ قَالُوا بَلَى قَالَ مَا الَّذِي أَهْلَكَنِي قَالُوا قَالَ اللهُ ( وَقَاتِلُوهُمْ حَتّٰى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلهِ ) قَالَ قَدْ قَاتَلْنَاهُمْ حَتّٰى نَفَيْنَاهُمْ فَكَانَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلهِ إِنْ شِئْتُمْ حَدَّثْتُكُمْ حَدِيثًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالُوا وَأَنْتَ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ نَعَمْ شَهِدْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ وَقَدْ بَعَثَ جَيْشًا مِنْ الْمُسْلِمِينَ إِلَى الْمُشْرِكِينَ فَلَمَّا لَقُوهُمْ قَاتَلُوهُمْ قِتَالًا شَدِيدًا فَمَنَحُوهُمْ أَكْتَافَهُمْ فَحَمَلَ رَجُلٌ مِنْ لُحْمَتِي عَلَى رَجُلٍ مِنْ الْمُشْرِكِينَ بِالرُّمْحِ فَلَمَّا غَشِيَهُ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ إِنِّي مُسْلِمٌ فَطَعَنَهُ فَقَتَلَهُ فَأَتَى رَسُولَ اللهِ ﷺ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ هَلَكْتُ قَالَ وَمَا الَّذِي صَنَعْتَ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ فَأَخْبَرَهُ بِالَّذِي صَنَعَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَهَلَّا شَقَقْتَ عَنْ بَطْنِهِ فَعَلِمْتَ مَا فِي قَلْبِهِ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ شَقَقْتُ بَطْنَهُ لَكُنْتُ أَعْلَمُ مَا فِي قَلْبِهِ قَالَ فَلَا أَنْتَ قَبِلْتَ مَا تَكَلَّمَ بِهِ وَلَا أَنْتَ تَعْلَمُ مَا فِي قَلْبِهِ قَالَ فَسَكَتَ عَنْهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَلَمْ يَلْبَثْ إِلَّا يَسِيرًا حَتّٰى مَاتَ فَدَفَنَّاهُ فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ فَقَالُوا لَعَلَّ عَدُوًّا نَبَشَهُ فَدَفَنَّاهُ ثُمَّ أَمَرْنَا غِلْمَانَنَا يَحْرُسُونَهُ فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ فَقُلْنَا لَعَلَّ الْغِلْمَانَ نَعَسُوا فَدَفَنَّاهُ ثُمَّ حَرَسْنَاهُ بِأَنْفُسِنَا فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ فَأَلْقَيْنَاهُ فِي بَعْضِ تِلْكَ الشِّعَابِ
حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ بْنُ حَفْصٍ الْأَيْلِيُّ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ السُّمَيْطِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ فِي سَرِيَّةٍ فَحَمَلَ رَجُلٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ عَلَى رَجُلٍ مِنْ الْمُشْرِكِينَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَزَادَ فِيهِ فَنَبَذَتْهُ الْأَرْضُ فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ ﷺ وَقَالَ إِنَّ الْأَرْضَ لَتَقْبَلُ مَنْ هُوَ شَرٌّ مِنْهُ وَلَكِنَّ اللهَ أَحَبَّ أَنْ يُرِيَكُمْ تَعْظِيمَ حُرْمَةِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ.
حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ بْنُ حَفْصٍ الْأَيْلِيُّ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ السُّمَيْطِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ فِي سَرِيَّةٍ فَحَمَلَ رَجُلٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ عَلَى رَجُلٍ مِنْ الْمُشْرِكِينَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَزَادَ فِيهِ فَنَبَذَتْهُ الْأَرْضُ فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ ﷺ وَقَالَ إِنَّ الْأَرْضَ لَتَقْبَلُ مَنْ هُوَ شَرٌّ مِنْهُ وَلَكِنَّ اللهَ أَحَبَّ أَنْ يُرِيَكُمْ تَعْظِيمَ حُرْمَةِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এখানে হত্যার ঘটনাটি সংক্ষিপ্ত আকারে আনা হয়েছে। অন্যান্য বর্ণনার আলোকে নিম্নে পূর্ণাঙ্গ ঘটনা ও তার ব্যাখ্যা পেশ করা হলো।
বনূ জুহায়না গোত্রের একটি শাখার নাম হুরাকাত। এ গোত্রের পূর্বপুরুষের নাম ছিল জুহায়শ। তার উপাধি ছিল হুরাকাহ। তিনি একটি গোত্রের উপর হামলা করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন। এ কারণেই তার উপাধি হয়েছিল হুরাকাহ- অগ্নিদগ্ধকারী। অগ্নিকাণ্ড দ্বারা যেমন সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কিছু অবশিষ্ট থাকে না, তার হামলাটিও ছিল অনেকটা সেরকম। এ গোত্রের বিরুদ্ধে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়েছিল হিজরী ৭ম সনের রমযান মাসে। হযরত উসামা ইবন যায়দ রাযি. ছিলেন এ যুদ্ধের সেনাপতি। এক বর্ণনানুযায়ী সেনাপতি ছিলেন হযরত গালিব ইবন আব্দুল্লাহ লায়ছী রাযি। এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী জয়ী হয়। বাহিনীটি ফিরে আসার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ জানানো হয়। তার মধ্যে এ সংবাদটিও ছিল যে, প্রতিপক্ষের এক সৈন্য لا اله الا الله বলা সত্ত্বেও হযরত উসামা রাযি. তাকে হত্যা করেছিলেন। ওই লোকটির নাম ছিল মিরদাস ইবন নাহীক।
হাদীসে আছে, নিজ কাজের জন্য হযরত উসামা রাযি.-এর নিজের মনেই খটকা দেখা দিয়েছিল এবং তিনি নিজেই বিষয়টি নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। তাতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই মর্মাহত হন। তিনি হযরত উসামা রাযি.-কে তিরস্কার করে বার বার বলতে থাকেন اقتلته بعدما قال: لا اله الا الله؟ (সে لا اله الا الله বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে)? অর্থাৎ لا اله الا الله বলার দ্বারা সে তো প্রাণের নিরাপত্তা লাভ করেছিল। এরপর আর তাকে হত্যা করার কোনও বৈধতা ছিল না। তা সত্ত্বেও তুমি তাকে হত্যা করলে? হযরত উসামা রাযি. প্রথমে উত্তর দিয়েছিলেন يا رسول الله ﷺ ، إنما كان متعوذا (ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তো তা বলেছিল প্রাণ বাঁচানোর জন্য)। অর্থাৎ তার অন্তরে এ কথার প্রতি বিশ্বাস ছিল না। হযরত উসামা রাযি. এমন কোনও লক্ষণ দেখতে পেয়েছিলেন, যা দ্বারা তাঁর এরকম ধারণা হয়েছিল। ফলে তিনি মনে করেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে সে যেহেতু এখনও কুফর অবস্থায়ই আছে, তাই মুখের এ উচ্চারণ দ্বারা সে প্রাণরক্ষা পাবে না। কিন্তু শরীআত যেহেতু জাহেরী অবস্থার উপর নির্ভর করেই বিধান জারি করে, তাই হযরত উসামা রাযি.-এর সে অজুহাত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গৃহীত হয়নি। তাই তিনি বার বার বলতে থাকেন- সে لا اله الا الله বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে? সম্ভবত এর দ্বারা উদ্দেশ্য ছিল তাঁর মনের সংশয় দূর করা এবং এ জাতীয় অজুহাতের ভিত্তিতে হত্যা করা যে জায়েয নয় তা স্পষ্ট করে দেওয়া, যাতে আর কখনও এরূপ কাজ না করে বসেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় হযরত উসামা রাযি.-এর মনের খটকা সম্পূর্ণ দূর হয়ে যায়। তিনি ভালোভাবে বুঝতে পারেন যে, ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা তার জন্য কিছুতেই সমীচীন হয়নি। ফলে তিনি খুব অনুতপ্ত হন। সে অনুতাপের মাত্রা তাঁর আক্ষেপ-বাক্য দ্বারা অনুমান করা যায়। তিনি বলেন
حتى تمنيت أني لم أكن أسلمت قبل ذلك اليوم - (শেষপর্যন্ত আমি আকাঙ্ক্ষা করলাম, সেদিনের আগে যদি আমি ইসলাম গ্রহণ না-ই করতাম!)। অর্থাৎ আগে ইসলাম না গ্রহণ করে যদি এই মুহূর্তে ইসলাম গ্রহণ করতাম, তবে তা দ্বারা এর পূর্বেকার আমার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যেত।
ইবন রাসলান রহ. বলেন, যেন তিনি এ অপরাধটির সামনে তাঁর ইতঃপূর্বের ইসলামগ্রহণ এবং যাবতীয় নেক আমলকে তুচ্ছ গণ্য করছেন। প্রকৃতপক্ষে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তীব্র আপত্তির কারণে তাঁর অন্তরে যে অনুতাপ সৃষ্টি হয়েছিল, এ উক্তিটি তাঁর সে অনুতাপেরই বহিঃপ্রকাশ। নয়তো ইসলামগ্রহণের মত মহাসম্পদের বিপরীতে তাঁর এ অপরাধটিকে তুলনায় আনা যায় না। কেননা এক তো তিনি হত্যা করেছিলেন তাঁর একটি ধারণার বশবর্তীতে, যদিও সে ধারণাটি ভুল। তাছাড়া হত্যাকর্ম ইচ্ছাকৃত হলেও সেটি একটি মহাপাপ বটে, কিন্তু কুফরীকর্ম নয় যে, তা দ্বারা ইসলাম বাতিল হয়ে যাবে।
কারও মতে ‘এর আগে ইসলাম গ্রহণ না করা' দ্বারা সম্ভবত তাঁর বোঝানো উদ্দেশ্য ছিল এমন ইসলামগ্রহণ, যার পর পাপকর্মও হয়ে যায়। অর্থাৎ তিনি আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন যে, যে ইসলামগ্রহণের পর আর কোনও গুনাহ করা হয় না, আমার ইসলামগ্রহণটা যদি সেরকম হত!
হাদীসে আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছিলেন افلا شققت عن قلبه حتى تعلم أقالها أم لا ؟ 'তুমি তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন, যাতে জানতে পার সে তা (অন্তর দিয়ে) বলেছিল কি না? অর্থাৎ তোমার যখন এ ধারণা জন্মাল যে, সে বলেছে অস্ত্রের ভয়ে, যদ্দরুন তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে, তখন সত্যিই সে অস্ত্রের ভয়ে তা বলেছে কি না, সে কথা জানার জন্য তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন? অথবা এর অর্থ- তুমি কি জান না প্রকৃত ঈমান এক গুপ্ত বিষয়, মানুষের অন্তর তার স্থান, আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কারও পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়, তাই দুনিয়ার যাবতীয় বিধান মানুষের বাহ্যিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে? তুমি যদি মনে কর বাহ্যিক অবস্থা দেখা যথেষ্ট নয়; বরং মনের অবস্থাও জানতে হবে, তাহলে তুমি তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন? প্রকৃতপক্ষে এটা এক তিরস্কার-বাক্য। এর দ্বারা বাস্তবিকই অন্তর ফেঁড়ে দেখতে বলার হুকুম দেওয়া উদ্দেশ্য নয়। কেননা অন্তর ফেঁড়ে ঈমান আছে কি না তা জানা তো সম্ভব নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মুখে কালেমা পাঠ দ্বারাই ইসলামগ্রহণ সাব্যস্ত হয়ে যায়। কাজেই যে ব্যক্তি মুখে কালেমা পাঠ করবে, তাকে মুসলিম বলেই গণ্য করতে হবে, যতক্ষণ না ইসলামবিরোধী কোনও কথা বা আচরণ তার দ্বারা প্রকাশ না পায়।
খ. আমাদের কাজ মানুষের বাহ্যিক অবস্থা অনুযায়ী আচরণ করা। মনে কি আছে বা না আছে তার পেছনে পড়া নয়।
গ. হযরত উসামা রাযি. ছিলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র। তা সত্ত্বেও তিনি তাঁর অনুচিত কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন, কোনওরূপ ছাড় দেননি। আমাদেরও কর্তব্য, অন্যায়-অনুচিত কাজের ক্ষেত্রে প্রিয়জনকেও কোনও ছাড় না দেওয়া।
বনূ জুহায়না গোত্রের একটি শাখার নাম হুরাকাত। এ গোত্রের পূর্বপুরুষের নাম ছিল জুহায়শ। তার উপাধি ছিল হুরাকাহ। তিনি একটি গোত্রের উপর হামলা করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন। এ কারণেই তার উপাধি হয়েছিল হুরাকাহ- অগ্নিদগ্ধকারী। অগ্নিকাণ্ড দ্বারা যেমন সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কিছু অবশিষ্ট থাকে না, তার হামলাটিও ছিল অনেকটা সেরকম। এ গোত্রের বিরুদ্ধে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়েছিল হিজরী ৭ম সনের রমযান মাসে। হযরত উসামা ইবন যায়দ রাযি. ছিলেন এ যুদ্ধের সেনাপতি। এক বর্ণনানুযায়ী সেনাপতি ছিলেন হযরত গালিব ইবন আব্দুল্লাহ লায়ছী রাযি। এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী জয়ী হয়। বাহিনীটি ফিরে আসার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ জানানো হয়। তার মধ্যে এ সংবাদটিও ছিল যে, প্রতিপক্ষের এক সৈন্য لا اله الا الله বলা সত্ত্বেও হযরত উসামা রাযি. তাকে হত্যা করেছিলেন। ওই লোকটির নাম ছিল মিরদাস ইবন নাহীক।
হাদীসে আছে, নিজ কাজের জন্য হযরত উসামা রাযি.-এর নিজের মনেই খটকা দেখা দিয়েছিল এবং তিনি নিজেই বিষয়টি নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। তাতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই মর্মাহত হন। তিনি হযরত উসামা রাযি.-কে তিরস্কার করে বার বার বলতে থাকেন اقتلته بعدما قال: لا اله الا الله؟ (সে لا اله الا الله বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে)? অর্থাৎ لا اله الا الله বলার দ্বারা সে তো প্রাণের নিরাপত্তা লাভ করেছিল। এরপর আর তাকে হত্যা করার কোনও বৈধতা ছিল না। তা সত্ত্বেও তুমি তাকে হত্যা করলে? হযরত উসামা রাযি. প্রথমে উত্তর দিয়েছিলেন يا رسول الله ﷺ ، إنما كان متعوذا (ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তো তা বলেছিল প্রাণ বাঁচানোর জন্য)। অর্থাৎ তার অন্তরে এ কথার প্রতি বিশ্বাস ছিল না। হযরত উসামা রাযি. এমন কোনও লক্ষণ দেখতে পেয়েছিলেন, যা দ্বারা তাঁর এরকম ধারণা হয়েছিল। ফলে তিনি মনে করেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে সে যেহেতু এখনও কুফর অবস্থায়ই আছে, তাই মুখের এ উচ্চারণ দ্বারা সে প্রাণরক্ষা পাবে না। কিন্তু শরীআত যেহেতু জাহেরী অবস্থার উপর নির্ভর করেই বিধান জারি করে, তাই হযরত উসামা রাযি.-এর সে অজুহাত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গৃহীত হয়নি। তাই তিনি বার বার বলতে থাকেন- সে لا اله الا الله বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে? সম্ভবত এর দ্বারা উদ্দেশ্য ছিল তাঁর মনের সংশয় দূর করা এবং এ জাতীয় অজুহাতের ভিত্তিতে হত্যা করা যে জায়েয নয় তা স্পষ্ট করে দেওয়া, যাতে আর কখনও এরূপ কাজ না করে বসেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় হযরত উসামা রাযি.-এর মনের খটকা সম্পূর্ণ দূর হয়ে যায়। তিনি ভালোভাবে বুঝতে পারেন যে, ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা তার জন্য কিছুতেই সমীচীন হয়নি। ফলে তিনি খুব অনুতপ্ত হন। সে অনুতাপের মাত্রা তাঁর আক্ষেপ-বাক্য দ্বারা অনুমান করা যায়। তিনি বলেন
حتى تمنيت أني لم أكن أسلمت قبل ذلك اليوم - (শেষপর্যন্ত আমি আকাঙ্ক্ষা করলাম, সেদিনের আগে যদি আমি ইসলাম গ্রহণ না-ই করতাম!)। অর্থাৎ আগে ইসলাম না গ্রহণ করে যদি এই মুহূর্তে ইসলাম গ্রহণ করতাম, তবে তা দ্বারা এর পূর্বেকার আমার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যেত।
ইবন রাসলান রহ. বলেন, যেন তিনি এ অপরাধটির সামনে তাঁর ইতঃপূর্বের ইসলামগ্রহণ এবং যাবতীয় নেক আমলকে তুচ্ছ গণ্য করছেন। প্রকৃতপক্ষে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তীব্র আপত্তির কারণে তাঁর অন্তরে যে অনুতাপ সৃষ্টি হয়েছিল, এ উক্তিটি তাঁর সে অনুতাপেরই বহিঃপ্রকাশ। নয়তো ইসলামগ্রহণের মত মহাসম্পদের বিপরীতে তাঁর এ অপরাধটিকে তুলনায় আনা যায় না। কেননা এক তো তিনি হত্যা করেছিলেন তাঁর একটি ধারণার বশবর্তীতে, যদিও সে ধারণাটি ভুল। তাছাড়া হত্যাকর্ম ইচ্ছাকৃত হলেও সেটি একটি মহাপাপ বটে, কিন্তু কুফরীকর্ম নয় যে, তা দ্বারা ইসলাম বাতিল হয়ে যাবে।
কারও মতে ‘এর আগে ইসলাম গ্রহণ না করা' দ্বারা সম্ভবত তাঁর বোঝানো উদ্দেশ্য ছিল এমন ইসলামগ্রহণ, যার পর পাপকর্মও হয়ে যায়। অর্থাৎ তিনি আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন যে, যে ইসলামগ্রহণের পর আর কোনও গুনাহ করা হয় না, আমার ইসলামগ্রহণটা যদি সেরকম হত!
হাদীসে আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছিলেন افلا شققت عن قلبه حتى تعلم أقالها أم لا ؟ 'তুমি তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন, যাতে জানতে পার সে তা (অন্তর দিয়ে) বলেছিল কি না? অর্থাৎ তোমার যখন এ ধারণা জন্মাল যে, সে বলেছে অস্ত্রের ভয়ে, যদ্দরুন তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে, তখন সত্যিই সে অস্ত্রের ভয়ে তা বলেছে কি না, সে কথা জানার জন্য তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন? অথবা এর অর্থ- তুমি কি জান না প্রকৃত ঈমান এক গুপ্ত বিষয়, মানুষের অন্তর তার স্থান, আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কারও পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়, তাই দুনিয়ার যাবতীয় বিধান মানুষের বাহ্যিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে? তুমি যদি মনে কর বাহ্যিক অবস্থা দেখা যথেষ্ট নয়; বরং মনের অবস্থাও জানতে হবে, তাহলে তুমি তার অন্তর ফেঁড়ে দেখলে না কেন? প্রকৃতপক্ষে এটা এক তিরস্কার-বাক্য। এর দ্বারা বাস্তবিকই অন্তর ফেঁড়ে দেখতে বলার হুকুম দেওয়া উদ্দেশ্য নয়। কেননা অন্তর ফেঁড়ে ঈমান আছে কি না তা জানা তো সম্ভব নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মুখে কালেমা পাঠ দ্বারাই ইসলামগ্রহণ সাব্যস্ত হয়ে যায়। কাজেই যে ব্যক্তি মুখে কালেমা পাঠ করবে, তাকে মুসলিম বলেই গণ্য করতে হবে, যতক্ষণ না ইসলামবিরোধী কোনও কথা বা আচরণ তার দ্বারা প্রকাশ না পায়।
খ. আমাদের কাজ মানুষের বাহ্যিক অবস্থা অনুযায়ী আচরণ করা। মনে কি আছে বা না আছে তার পেছনে পড়া নয়।
গ. হযরত উসামা রাযি. ছিলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র। তা সত্ত্বেও তিনি তাঁর অনুচিত কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন, কোনওরূপ ছাড় দেননি। আমাদেরও কর্তব্য, অন্যায়-অনুচিত কাজের ক্ষেত্রে প্রিয়জনকেও কোনও ছাড় না দেওয়া।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
