কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
১৩. রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
হাদীস নং: ২৩৬২
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৬২
যার কাছে সাক্ষাৎ চাওয়া হয়নি, তার সাক্ষাৎ দেয়া মাকরূহ
২৩৬২। 'উছমান ইবন আবু শায়বা ও'আমর ইবন রাফি' (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ ইবন মাস'উদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে প্রশ্ন করা হলোঃ কোন্ ব্যক্তি উত্তম? তিনি বললেনঃ আমার যুগের লোক (অর্থাৎ সাহাবী), তারপর তাদের নিকটতম যুগের লোক, (তাবেঈ' ) তারপর তাদের নিকটতম সময়ের লোক (তাবই'-তাবিঈ')। অতঃপর এমন কিছু লোক আসবে যাদের সাক্ষ্য কসমের আগে হবে এবং কসম সাক্ষ্যের আগে।[১]
[১] অর্থাৎ তারা সাক্ষ্য দিতে এত উদগ্রীব থাকবে যে, তার কোন নিয়ম-নীতি থাকবেনা। তারা কখনো সাক্ষী দেয়ার আগেই কসম খেয়ে বসবে, আবার কখনো সাক্ষী দেয়ার পর কসম খাবে। মোট কথা, তাদের কাছে সাক্ষ্যের কোন গুরুত্ব থাকবে না।
[১] অর্থাৎ তারা সাক্ষ্য দিতে এত উদগ্রীব থাকবে যে, তার কোন নিয়ম-নীতি থাকবেনা। তারা কখনো সাক্ষী দেয়ার আগেই কসম খেয়ে বসবে, আবার কখনো সাক্ষী দেয়ার পর কসম খাবে। মোট কথা, তাদের কাছে সাক্ষ্যের কোন গুরুত্ব থাকবে না।
بَاب كَرَاهِيَةِ الشَّهَادَةِ لِمَنْ لَمْ يَسْتَشْهِدْ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبِيدَةَ السَّلْمَانِيِّ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ النَّاسِ خَيْرٌ قَالَ " قَرْنِي ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ يَجِيءُ قَوْمٌ تَبْدُرُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- (সর্বোত্তম হল আমার যুগের মানুষ)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ বলতে তাঁর নবুওয়াতপ্রাপ্তি থেকে যে তারিখে সর্বশেষ সাহাবী ইন্তিকাল করেছেন, সেই পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সবশেষে ইন্তিকাল করেছেন হযরত আবুত তুফায়ল আমের ইবন ওয়াছিলা রাযি। তিনি ১১০ হিজরী সনে ইন্তিকাল করেন। তারপর ইরশাদ করেন-
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। অর্থাৎ তাবি'ঈদের যুগ। যারা ঈমানের সঙ্গে কোনও সাহাবীকে দেখেছেন। এই যুগ আনুমানিক হিজরী ১৫০ সন পর্যন্ত। ইমাম আবূ হানীফা রহ. হিজরী ১৫০ সনে ইন্তিকাল করেছেন। বিশুদ্ধমত অনুযায়ী তিনি একজন তাবিঈ ছিলেন।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। এ যুগ ছিল আনুমানিক ২২০ সন পর্যন্ত। এটা তাবে-তাবি'ঈনের যুগ। যারা তাবি‘ঈদের দেখেছেন। এর পর থেকেই দীনের মধ্যে নানা ফিতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রকাশ থাকে যে, কোনও একটি যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলার অর্থ এ নয় যে, সে যুগের প্রত্যেকেই পরবর্তী যুগের সকলের চেয়ে উৎকৃষ্ট। এটা বলা হয়েছে সাধারণ অবস্থার বিচারে। সুতরাং এর মধ্যে ব্যতিক্রম পাওয়া যেতেই পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠতম মানুষ বলা হয়েছে। তার মানে এ নয় যে, সাহাবীগণ আগের নবী-রাসূলগণের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। হাঁ, তাঁরা আগের যুগের সাধারণ মুমিনদের চেয়ে অবশ্যই উৎকৃষ্ট ছিলেন। এমনিভাবে তাবে-তাবি'ঈদের মধ্যে অনেকে এমন ছিলেন, যারা ঈমান, ইলম, আমল ও আখলাকের দিক থেকে তাবিঈদের যুগের অনেকের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন। তবে সামগ্রিক দৃষ্টিতে অবশ্যই তাবি'ঈগণ তাবে-তাবি'ঈদের তুলনায় উত্তম ছিলেন। এমনিভাবে আরও পরে জন্ম নেওয়া এমন অনেকেই আছেন, যারা ইবাদত-বন্দেগী, দীনের খেদমত, জিহাদ প্রভৃতি দিক থেকে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। বহু পরের হওয়া সত্ত্বেও তারা পূর্ববর্তী অনেককে টপকে গিয়েছেন। এটা এ যুগেও সম্ভব। তাই পরবর্তীকালীন হওয়ায় হতাশার কোনও কারণ নেই। নিজ ঈমান ও আমলে যত্নবান থাকলে পূর্ববর্তীকালীন আল্লাহওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রথম তিন কালের মুসলিমগণ শ্রেষ্ঠ। তাদের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। তাদের ভালো ভালো কাজকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তাদের দ্বারা ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে গেলে তার সমালোচনা হতে বিরত থাকতে হবে।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। অর্থাৎ তাবি'ঈদের যুগ। যারা ঈমানের সঙ্গে কোনও সাহাবীকে দেখেছেন। এই যুগ আনুমানিক হিজরী ১৫০ সন পর্যন্ত। ইমাম আবূ হানীফা রহ. হিজরী ১৫০ সনে ইন্তিকাল করেছেন। বিশুদ্ধমত অনুযায়ী তিনি একজন তাবিঈ ছিলেন।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। এ যুগ ছিল আনুমানিক ২২০ সন পর্যন্ত। এটা তাবে-তাবি'ঈনের যুগ। যারা তাবি‘ঈদের দেখেছেন। এর পর থেকেই দীনের মধ্যে নানা ফিতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রকাশ থাকে যে, কোনও একটি যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলার অর্থ এ নয় যে, সে যুগের প্রত্যেকেই পরবর্তী যুগের সকলের চেয়ে উৎকৃষ্ট। এটা বলা হয়েছে সাধারণ অবস্থার বিচারে। সুতরাং এর মধ্যে ব্যতিক্রম পাওয়া যেতেই পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠতম মানুষ বলা হয়েছে। তার মানে এ নয় যে, সাহাবীগণ আগের নবী-রাসূলগণের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। হাঁ, তাঁরা আগের যুগের সাধারণ মুমিনদের চেয়ে অবশ্যই উৎকৃষ্ট ছিলেন। এমনিভাবে তাবে-তাবি'ঈদের মধ্যে অনেকে এমন ছিলেন, যারা ঈমান, ইলম, আমল ও আখলাকের দিক থেকে তাবিঈদের যুগের অনেকের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন। তবে সামগ্রিক দৃষ্টিতে অবশ্যই তাবি'ঈগণ তাবে-তাবি'ঈদের তুলনায় উত্তম ছিলেন। এমনিভাবে আরও পরে জন্ম নেওয়া এমন অনেকেই আছেন, যারা ইবাদত-বন্দেগী, দীনের খেদমত, জিহাদ প্রভৃতি দিক থেকে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। বহু পরের হওয়া সত্ত্বেও তারা পূর্ববর্তী অনেককে টপকে গিয়েছেন। এটা এ যুগেও সম্ভব। তাই পরবর্তীকালীন হওয়ায় হতাশার কোনও কারণ নেই। নিজ ঈমান ও আমলে যত্নবান থাকলে পূর্ববর্তীকালীন আল্লাহওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রথম তিন কালের মুসলিমগণ শ্রেষ্ঠ। তাদের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। তাদের ভালো ভালো কাজকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তাদের দ্বারা ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে গেলে তার সমালোচনা হতে বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
