আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৬- ফাযায়েল ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৮৪৩
২০. পাপ কাজ থেকে নবী (ﷺ) এর বহু দূরে থাকা এবং মুবাহ (বৈধ) কাজের মধ্যে অধিক সহজটিকে গ্রহণ করা, (নিজের ব্যাপারে প্রতিশোধ গ্রহণ না করা) এবং আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে প্রতিশোধ গ্রহণ করা
৫৮৪৩। আবু বকর-ইবনে আবি শাঈবা, ইবনে নুমাইর ও আবু কুরায়ব (রাহঃ) একই সনদে হিশাম থেকে বর্ণনা করেছেন এবং তাঁদের একে অন্য থেকে কিছু অধিক বর্ণনা করেছেন।
باب مباعدة النبي للآثام واختياره من المباح أسهله وانتقامه لله عند انتهاك حرماته
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، وَوَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ يَزِيدُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে ব্যক্তিগত বিষয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিষ্ণুতা ও ক্ষমাশীলতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সেইসঙ্গে দীনী বিষয়ে তিনি কতটা আপোশহীন ছিলেন তাও এর মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে। বলা হয়েছে যে, তিনি নিজ হাতে কখনও কোনও নারী বা খাদেমকে মারেননি। সেকালে নারী ও খাদেমদের মারপিট করা ছিল অতি সাধারণ ব্যাপার। তাদের তো সামাজিক কোনও মর্যাদাই ছিল না। ছিল না তাদের প্রতি মায়া-দয়া। তাই কথায় কথায় তাদের গায়ে হাত তোলা হত। কিন্তু সেই পরিবেশ-পরিস্থিতিতেও তিনি কখনও কোনও নারীর গায়ে হাত তোলেননি, সে নারী যে-ই হোক। কোনও স্ত্রীকে মারার তো প্রশ্নই আসে না। জীবনভর তিনি আমাদের মায়েদের অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীদের যথাযথ মর্যাদার স্থানেই রেখেছেন।
তিনি ছিলেন নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকারী। অতি সাধারণ স্তরের নারী, এমনকি কোনও দাসীও তাঁর সঙ্গে নির্ভয়ে কথা বলতে পারত। নিজ প্রয়োজনে তাঁকে সঙ্গে করে নিয়েও যেতে পারত। হযরত আনাস রাযি. বর্ণনা করেন-
إِنْ كَانَتِ الْأَمَةُ مِنْ إِمَاءِ الْمَدِينَةِ لَتَأْخُذُ بِيَدِ النَّبِيِّ ، فَتَنْطَلِقُ بِهِ حَيْثُ شَاءَتْ
এমনও হতো যে, মদীনার দাসীদের মধ্যে কোনও দাসী (এসে) নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত ধরে তাঁকে যেখানে চাইত নিয়ে যেত। (সহীহ বুখারী: ৬০৭২; মুসনাদে আহমাদ: ১১৯৪১; সুনানে ইবন মাজাহ : ৪১৭৮)
এমন মমত্বের আচরণ যিনি নারীর প্রতি করতেন, তিনি তাদের শারীরিক শাস্তি দেবেন, তা তো ভাবাই যায় না। দেনওনি কখনও।
এমনিভাবে খাদেম-সেবকের ভুল-ত্রুটি হলেও তিনি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। হযরত আনাস রাযি. ১০ বছর তাঁর খেদমত করেছেন। এ দীর্ঘ সময়ে তাঁকে মারা তো দূরের কথা, কখনও ধমক পর্যন্ত দেননি। হাদীছ ও সীরাত গ্রন্থসমূহে তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছুই বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত বিষয়ে কখনও কারও গায়ে হাত তুলেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই।
إِلَّا أَنْ يُجَاهِدَ فِي سَبِيْلِ اللَّهِ (আল্লাহর পথে জিহাদ করা ছাড়া)। আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহর কালেমা তথা আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে লড়াই ও সংগ্রাম করাকে বোঝায়। তার চূড়ান্ত পর্যায় হল সসস্ত্র যুদ্ধ। যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত করা দোষের নয়। হত্যা করাও আপত্তিকর নয়। বরং সেটাই বীরত্ব। প্রতিপক্ষকে আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করা নিজের বিপর্যয় ডেকে আনারই নামান্তর। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত জিহাদে স্বেচ্ছায় বিপর্যয়ের মুখে পড়া অপরাধ ও কঠিন পাপ। পার্থিব রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহেও এরূপ অবহেলাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। সুতরাং রণক্ষেত্রে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিপক্ষকে আঘাত করতেই পারেন। তা না করাকে দূষণীয় মনে করা হতো এবং তাকে তার দুর্বলতা গণ্য করা হত। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের বীর। এরূপ দোষ ও দুর্বলতার কোনও স্থান তাঁর চরিত্রে ছিল না।
وَمَا نِيلَ مِنْهُ شَيْءٌ قَط فَيَنْتَقِمَ مِنْ صَاحِبِهِ (এমন কখনও হয়নি যে, তাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে আর তিনি কষ্টদাতা থেকে প্রতিশোধ নিয়েছেন)। অর্থাৎ কেউ যদি শারীরিকভাবে তাঁকে কষ্ট দিত অথবা তাঁর আর্থিক ক্ষতি করত কিংবা তাঁর ইজ্জত-সম্মানে আঘাত করত, তবে সে কারণে তিনি প্রতিশোধ নিতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন। মক্কার মুশরিকগণ সবরকমেই তাঁর উপর আঘাত হেনেছে। কিন্তু তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। উহুদের যুদ্ধে শত্রুদের আঘাতে তিনি কেমন আহত ও রক্তাক্ত হয়েছিলেন! তখন তাঁকে তাদের জন্য বদদু'আও করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। কেবল ক্ষমা করেই ক্ষান্ত হননি; আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আও করেছিলেন যে, হে আল্লাহ! আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন, কারণ তারা বোঝে না। আল্লাহ তা'আলা পরম ক্ষমাশীল। তাঁর সে ক্ষমাশীলতার গুণে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ভূষিত ছিলেন। তাই ব্যক্তিগত বিষয়ে জীবনভর তিনি ক্ষমাই করে গেছেন।
إِلَّا أَنْ يُنْتَهَكَ شَيْءٌ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ تَعَالَى، فَيَنْتَقِمُ لِلَّهِ تَعَالَى (তবে আল্লাহ তা‘আলার হারামকৃত কোনও বিষয়ে তাঁর বিধান লঙ্ঘন করা হলে তিনি আল্লাহর জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন)। অর্থাৎ কেউ যদি এমন কোনও অপরাধ করত, যদ্দরুন তার উপর শরী'আতের নির্ধারিত আইন প্রয়োগ অবধারিত হয়ে যায় আর তার সে অপরাধ প্রমাণিতও হয়ে যায়, তবে তিনি অবশ্যই তার উপর শরী'আতের সে আইন প্রয়োগ করতেন। তিনি তা ক্ষমা করতেন না। কাজেই কারও চুরির অপরাধ প্রমাণ হয়ে গেলে তিনি তার হাত কাটার হুকুম জারি করেছেন। কারও ব্যভিচার প্রমাণিত হলে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগ করেছেন। কারও দ্বারা অন্যের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপের অপরাধ সাব্যস্ত হলে তাকেও ক্ষমা করেননি, তাতে অপরাধী যে-ই হোক। এ ক্ষেত্রে তাঁর কাছে আত্মীয়-অনাত্মীয় এবং অভিজাত ও সাধারণের কোনও তারতম্য ছিল না। এমনকি কেউ অপরাধীকে ক্ষমা করার জন্য সুপারিশ করলেও তিনি কখনও তা গ্রাহ্য করেননি। বরং সে সুপারিশকে কঠিনভাবে অপসন্দ করেছেন। এটাই নিয়ম। ব্যক্তিগত বিষয়ে ক্ষমাশীলতা কাম্য ও প্রশংসনীয়। কিন্তু শরী'আতের আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমার কোনও সুযোগ নেই। বিচারক আইন কার্যকর করতে বাধ্য।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কখনও কোনও নারীর গায়ে হাত তুলতে নেই। তাদেরকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা উচিত।
খ. খাদেম ও সেবকদের মারধর করা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের পরিপন্থী।
গ. আল্লাহর পথে জিহাদকালে কোনওরূপ শিথিলতা ও মানসিক দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দিতে নেই। রণক্ষেত্র বীরত্ব প্রদর্শন ও শক্তি পরীক্ষারই স্থান।
ঘ. কারও দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা কষ্ট পেলে ক্ষমাশীলতার পরিচয় দেওয়া উচিত। প্রতিশোধগ্রহণ বাঞ্ছনীয় নয়।
ঙ. আদালতে অপরাধীর অপরাধ প্রমাণিত হলে শর'ঈ বিধান কার্যকর করা আবশ্যিক। বিচারকের তা ক্ষমা করার অধিকার নেই।
তিনি ছিলেন নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকারী। অতি সাধারণ স্তরের নারী, এমনকি কোনও দাসীও তাঁর সঙ্গে নির্ভয়ে কথা বলতে পারত। নিজ প্রয়োজনে তাঁকে সঙ্গে করে নিয়েও যেতে পারত। হযরত আনাস রাযি. বর্ণনা করেন-
إِنْ كَانَتِ الْأَمَةُ مِنْ إِمَاءِ الْمَدِينَةِ لَتَأْخُذُ بِيَدِ النَّبِيِّ ، فَتَنْطَلِقُ بِهِ حَيْثُ شَاءَتْ
এমনও হতো যে, মদীনার দাসীদের মধ্যে কোনও দাসী (এসে) নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত ধরে তাঁকে যেখানে চাইত নিয়ে যেত। (সহীহ বুখারী: ৬০৭২; মুসনাদে আহমাদ: ১১৯৪১; সুনানে ইবন মাজাহ : ৪১৭৮)
এমন মমত্বের আচরণ যিনি নারীর প্রতি করতেন, তিনি তাদের শারীরিক শাস্তি দেবেন, তা তো ভাবাই যায় না। দেনওনি কখনও।
এমনিভাবে খাদেম-সেবকের ভুল-ত্রুটি হলেও তিনি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। হযরত আনাস রাযি. ১০ বছর তাঁর খেদমত করেছেন। এ দীর্ঘ সময়ে তাঁকে মারা তো দূরের কথা, কখনও ধমক পর্যন্ত দেননি। হাদীছ ও সীরাত গ্রন্থসমূহে তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছুই বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত বিষয়ে কখনও কারও গায়ে হাত তুলেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই।
إِلَّا أَنْ يُجَاهِدَ فِي سَبِيْلِ اللَّهِ (আল্লাহর পথে জিহাদ করা ছাড়া)। আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহর কালেমা তথা আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে লড়াই ও সংগ্রাম করাকে বোঝায়। তার চূড়ান্ত পর্যায় হল সসস্ত্র যুদ্ধ। যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত করা দোষের নয়। হত্যা করাও আপত্তিকর নয়। বরং সেটাই বীরত্ব। প্রতিপক্ষকে আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করা নিজের বিপর্যয় ডেকে আনারই নামান্তর। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত জিহাদে স্বেচ্ছায় বিপর্যয়ের মুখে পড়া অপরাধ ও কঠিন পাপ। পার্থিব রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহেও এরূপ অবহেলাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। সুতরাং রণক্ষেত্রে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিপক্ষকে আঘাত করতেই পারেন। তা না করাকে দূষণীয় মনে করা হতো এবং তাকে তার দুর্বলতা গণ্য করা হত। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের বীর। এরূপ দোষ ও দুর্বলতার কোনও স্থান তাঁর চরিত্রে ছিল না।
وَمَا نِيلَ مِنْهُ شَيْءٌ قَط فَيَنْتَقِمَ مِنْ صَاحِبِهِ (এমন কখনও হয়নি যে, তাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে আর তিনি কষ্টদাতা থেকে প্রতিশোধ নিয়েছেন)। অর্থাৎ কেউ যদি শারীরিকভাবে তাঁকে কষ্ট দিত অথবা তাঁর আর্থিক ক্ষতি করত কিংবা তাঁর ইজ্জত-সম্মানে আঘাত করত, তবে সে কারণে তিনি প্রতিশোধ নিতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন। মক্কার মুশরিকগণ সবরকমেই তাঁর উপর আঘাত হেনেছে। কিন্তু তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। উহুদের যুদ্ধে শত্রুদের আঘাতে তিনি কেমন আহত ও রক্তাক্ত হয়েছিলেন! তখন তাঁকে তাদের জন্য বদদু'আও করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। কেবল ক্ষমা করেই ক্ষান্ত হননি; আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আও করেছিলেন যে, হে আল্লাহ! আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন, কারণ তারা বোঝে না। আল্লাহ তা'আলা পরম ক্ষমাশীল। তাঁর সে ক্ষমাশীলতার গুণে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ভূষিত ছিলেন। তাই ব্যক্তিগত বিষয়ে জীবনভর তিনি ক্ষমাই করে গেছেন।
إِلَّا أَنْ يُنْتَهَكَ شَيْءٌ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ تَعَالَى، فَيَنْتَقِمُ لِلَّهِ تَعَالَى (তবে আল্লাহ তা‘আলার হারামকৃত কোনও বিষয়ে তাঁর বিধান লঙ্ঘন করা হলে তিনি আল্লাহর জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন)। অর্থাৎ কেউ যদি এমন কোনও অপরাধ করত, যদ্দরুন তার উপর শরী'আতের নির্ধারিত আইন প্রয়োগ অবধারিত হয়ে যায় আর তার সে অপরাধ প্রমাণিতও হয়ে যায়, তবে তিনি অবশ্যই তার উপর শরী'আতের সে আইন প্রয়োগ করতেন। তিনি তা ক্ষমা করতেন না। কাজেই কারও চুরির অপরাধ প্রমাণ হয়ে গেলে তিনি তার হাত কাটার হুকুম জারি করেছেন। কারও ব্যভিচার প্রমাণিত হলে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগ করেছেন। কারও দ্বারা অন্যের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপের অপরাধ সাব্যস্ত হলে তাকেও ক্ষমা করেননি, তাতে অপরাধী যে-ই হোক। এ ক্ষেত্রে তাঁর কাছে আত্মীয়-অনাত্মীয় এবং অভিজাত ও সাধারণের কোনও তারতম্য ছিল না। এমনকি কেউ অপরাধীকে ক্ষমা করার জন্য সুপারিশ করলেও তিনি কখনও তা গ্রাহ্য করেননি। বরং সে সুপারিশকে কঠিনভাবে অপসন্দ করেছেন। এটাই নিয়ম। ব্যক্তিগত বিষয়ে ক্ষমাশীলতা কাম্য ও প্রশংসনীয়। কিন্তু শরী'আতের আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমার কোনও সুযোগ নেই। বিচারক আইন কার্যকর করতে বাধ্য।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কখনও কোনও নারীর গায়ে হাত তুলতে নেই। তাদেরকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা উচিত।
খ. খাদেম ও সেবকদের মারধর করা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের পরিপন্থী।
গ. আল্লাহর পথে জিহাদকালে কোনওরূপ শিথিলতা ও মানসিক দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দিতে নেই। রণক্ষেত্র বীরত্ব প্রদর্শন ও শক্তি পরীক্ষারই স্থান।
ঘ. কারও দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা কষ্ট পেলে ক্ষমাশীলতার পরিচয় দেওয়া উচিত। প্রতিশোধগ্রহণ বাঞ্ছনীয় নয়।
ঙ. আদালতে অপরাধীর অপরাধ প্রমাণিত হলে শর'ঈ বিধান কার্যকর করা আবশ্যিক। বিচারকের তা ক্ষমা করার অধিকার নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: