ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৩৩. জবাইয়ের নিয়মাবলি

হাদীস নং: ২২৯২
খাদ্যের দোষ বলা হবে না
(২২৯২) আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কখনো কোনো খাদ্যের দোষ বলেন নি। যদি খাদ্যের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেছেন, তবে তা ভক্ষণ করেছেন । তা না-হলে তিনি তা ভক্ষণ থেকে বিরত থেকেছেন।
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: ما عاب النّبي صلى الله عليه وسلم طعاما قط إن اشتهاه أكله وإلا تركه.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে জানানো হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও খাদ্যের দোষত্রুটি ধরতেন না। খাদ্যের দোষ ধরা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়। খাদ্য আল্লাহর দান। তাতে দোষ ধরার দ্বারা আল্লাহ তা'আলার অকৃতজ্ঞতা করা হয়। যদি উদ্দেশ্য থাকে রান্না ভালো না হওয়ার কথা বোঝানো, তবে রাঁধুনীর মনে কষ্ট দেওয়া হয়। সব রাঁধুনীই চেষ্টা করে যাতে রান্না ভালো হয়। কিন্তু সকলের যোগ্যতা সমান নয়। তাই কারও রান্নায় স্বাদ বেশি হয়, কারওটায় কম হয়। তবে চেষ্টায় ত্রুটি করে না কেউই। এ অবস্থায় রান্নার বদনাম করলে রাঁধুনীর মনে আঘাত লাগে। কারও মনে আঘাত করা জায়েয নয়। তাছাড়া প্রস্তুতকৃত খাবার খাওয়া যাচ্ছে বলে রাঁধুনী কৃতজ্ঞতা পাওয়ারও হক রাখে। এ অবস্থায় রান্নার বদনাম করলে তার অকৃতজ্ঞতা হয়। শরী'আত যেমন আল্লাহ তা'আলার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে বলে, তেমনি মানুষেরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের শিক্ষা দিয়ে থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল ক্ষেত্রেই আমাদের আদর্শ। তিনি খাদ্যের বদনাম না করে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যেন আমরাও কোনও খাদ্যের বদনাম না করি।

হাঁ, সব খাবার সবার রুচিসম্মত হয় না। একেকজনের রুচি একেকরকম। তাই কোনও খাবারে যদি কারও রুচি না থাকে, তবে সে তা খাবে না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাই করতেন। যে খাবারে তাঁর রুচি হতো না, তিনি তা খাওয়া হতে বিরত থাকতেন। তাই বলে তিনি তার বদনাম করতেন না। এটাও আমাদের জন্য শিক্ষা। কারও কোনও খাবার ভালো নাও লাগতে পারে। ভালো না লাগলে সে খাবে না। কিন্তু খাবারটির বদনামও সে করবে না। উন্নাসিকতা দেখাবে না। এমন বলবে না যে, এমন খাবার কেউ খায় নাকি বা এমন বাজে খাবার আমি খাই না। কেননা এটা অহমিকা। সেইসঙ্গে আল্লাহ তা'আলার অকৃতজ্ঞতাও।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কোনও খাদ্যের বদনাম করতে নেই।

খ. কারও কোনও খাদ্যে রুচি না থাকলে সে তা খাবে না। তাই বলে সে খাদ্যের নিন্দা করতে পারবে না। আবার সে খাবার যেহেতু তার রুচিমতো নয়, তাই তাকে তা খাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করাও সমীচীন নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন