ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৩৩. জবাইয়ের নিয়মাবলি

হাদীস নং: ২২৯১
আহারের পরে আঙুলগুলো চাটা
(২২৯১) ইবন আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোনো খাদ্য ভক্ষণ করবে, তখন যে যেন তার হাত মোছার আগে তা নিজে চেটে নেয় অথবা অন্যকে দিয়ে চাটিয়ে নেয়।
عن ابن عباس رضي الله عنهما مرفوعا: إذا أكل أحدكم من الطعام فلا يمسح يده حتى يلعقها أو يلعقها

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে হাতের আঙ্গুল চেটে না খাওয়া পর্যন্ত মুছতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ আঙ্গুলে যে খাদ্য লেগে থাকে, মুছে ফেললে তা নষ্ট হয়। খাদ্যের সামান্য অংশও নষ্ট করা উচিত নয়। বিশেষত এ কারণেও মোছার আগে চেটে নেওয়া উচিত যে, অসম্ভব নয় আঙ্গুলে লেগে থাকা সে খাদ্যের মধ্যে বরকত রয়েছে। এ কারণটি কোনও কোনও হাদীছেও উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন সামনে আসছে।

চেটে খাওয়াটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ। তিনি নিজেও এরূপ করতেন। সুতরাং এটি সুন্নত। এক শ্রেণির লোক চেটে খাওয়াকে দূষণীয় মনে করে। এটা তাদের দীনের বুঝের অভাব। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যা-ই করতে বলেছেন, তার মধ্যেই কল্যাণ। কাজেই যে যাই মনে করুক, তাঁর সুন্নত কিছুতেই তরক করা যাবে না।

হাদীছটিতে আঙ্গুল নিজে চাটতে বলা হয়েছে অথবা অন্যকে দিয়ে চাটাতে বলা হয়েছে। এটিকে নিয়ে কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে। যখন জানা গেল এটা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুম, তখন কারও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের তোয়াক্কা করার অবকাশ নেই। ব্যঙ্গ করাটা তাদের বেদীনী। অন্যকে দিয়ে চাটানোর অর্থ যে-কাউকে দিয়ে চাটানো নয়। এটা স্বাভাবিক বুদ্ধিতেই বুঝে আসে। যারা স্নেহের পাত্র, তাদেরকে দিয়েই এটা করতে বলা হয়েছে। কোনও স্নেহভাজনকে দিয়ে আঙ্গুল চাটালে তাতে সে খুশিই হয়। যেমন নিজ পুত্র-কন্যা, নাতি-নাতনি, ছাত্র ও শিষ্য ইত্যাদি। তারা বরং চাটার সুযোগ পেলে সেটিকে পরম পাওয়াই মনে করে। হাঁ, যার সঙ্গে এমন হৃদ্যতা ও ঘনিষ্ঠতা নেই, তাকে দিয়ে চাটানো যাবে না। তা কেউ চাটাতে যায়ও না। প্রকৃতপক্ষে এটা স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান ও স্নেহ-ভালোবাসার সাথে সম্পৃক্ত। তাই এ কাজকে সে দৃষ্টিতেই দেখতে হবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

খাওয়ার পর হাত মোছা বা ধোওয়ার আগে ভালোভাবে আঙ্গুল চেটে নিতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ফিকহুস সুনান - হাদীস নং ২২৯১ | মুসলিম বাংলা