ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার
১- সামগ্রিক মূলনীতিসমূহ
হাদীস নং: ১
নিয়্যাত শুদ্ধিকরণ
(১) উমার ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কর্মসমূহ নিয়্যাত বা উদ্দেশ্যের দ্বারাই (উদ্দেশ্যের ভিত্তিতেই কর্মের প্রতিদান নির্ধারিত হয়)। একজন মানুষ তাই লাভ করবে যা সে উদ্দেশ্য করবে। (বুখারি ও মুসলিম)।
النية
عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إنما الأعمال بالنيات وإنما لإمرئ ما نوى.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
পবিত্র এ হাদীছে প্রথম বাক্য إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّات (সমস্ত আমল নিয়তের সাথে সম্পর্কযুক্ত)। এ বাক্যটি একটি মূলনীতিস্বরূপ। এতে বলা হয়েছে- প্রতিটি আমলের ভালোমন্দ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। নিয়ত ভালো হলে আমলটি ভালো আর নিয়ত মন্দ হলে আমলটি মন্দরূপে গণ্য হবে। কেবল বাহ্যিক রূপ ভালো হওয়াই আমল ভালো হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। বাহ্যিক রূপ ভালো হওয়া সত্ত্বেও নিয়ত যদি মন্দ হয়, তবে সে আমল ভালো বলে গণ্য হবে না। বরং নিয়ত মন্দ হওয়ার কারণে সেই বাহ্যিক ভালো আমলটিও মন্দ সাব্যস্ত হবে। কথাটি এভাবেও বলা যায় যে, আল্লাহর কাছে কোনও কাজ গ্রহণযোগ্য হওয়া বা না হওয়া ইখলাস ও নিয়তের উপর নির্ভরশীল। কাজটি যদি ইখলাসের সাথে অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। পক্ষান্তরে উদ্দেশ্য যদি আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভ না হয়ে অন্যকিছু হয়, তবে সে আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। সুতরাং প্রত্যেকের কর্তব্য সমস্ত আমলেই বিশুদ্ধ নিয়ত ও ইখলাসের প্রতি যত্নবান থাকা।
দ্বিতীয় বাক্য وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى (প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে, যা সে নিয়ত করে) এ বাক্যটি ওই মূলনীতির ফলাফল। বলা হয়েছে- প্রত্যেকে তাই পাবে, যা সে নিয়ত করে। অর্থাৎ কোনও আমল দ্বারা যদি আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে, তবে সেই আমল দ্বারা সে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ করবে। পক্ষান্তরে যদি উদ্দেশ্য থাকে সুনাম-সুখ্যাতি লাভ করা বা মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করা কিংবা টাকা-পয়সা ও ধন-দৌলত হাসিল করা, তবে ওই আমল দ্বারা সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে না। বাহ্যদৃষ্টিতে সে আমল যতই সুন্দর হোক না কেন, তাতে সে কোনও ছওয়াব পাবে না। এবং আখিরাতে তার বিনিময়ে তার কিছুই অর্জিত হবে না।
অতঃপর হিজরত দ্বারা ভালোমন্দ নিয়তের দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। হিজরত মানে পরিত্যাগ করা। পরিভাষায় দীন ও ঈমান হেফাজতের উদ্দেশ্যে কুফরের দেশ পরিত্যাগ করে ইসলামী দেশে গমন করাকে হিজরত বলা হয়। যে-কোনও মন্দ কাজ পরিত্যাগকেও হিজরত বলে। যে ব্যক্তি হিজরত করে, তাকে বলা হয় মুহাজির। এক হাদীছে আছে- প্রকৃত মুহাজির সেই; যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী পরিত্যাগ করে চলে। এর মধ্যে শরীআতের সমস্ত আদেশ-নিষেধ এসে যায়। কেননা শরীআতের আদিষ্ট বিষয়াবলী পালন করতে হলে মনের খেয়াল-খুশি পরিত্যাগ করতে হয়। অনুরূপ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে দূরে থাকার জন্যও মনের বিরোধিতা করা অপরিহার্য হয়। সুতরাং ব্যাপক অর্থে হিজরত এমন এক আমল, গোটা শরীআতই যার অন্তর্ভুক্ত। তবে এ হাদীছে হিজরত দ্বারা বিশেষভাবে দেশত্যাগকেই বোঝানো হয়েছে।
তো এই হিজরত এমন এক আমল, নিয়তের ভালোমন্দ দ্বারা যার ভালোমন্দ সাব্যস্ত হয়। উভয় অবস্থায় এর বাহ্যিক রূপ একই থাকে। ফলে বাহ্যিক রূপ দ্বারা এর ভালোমন্দ ও শুদ্ধাশুদ্ধ নির্ণয় করা যায় না।
দ্বিতীয় বাক্য وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى (প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে, যা সে নিয়ত করে) এ বাক্যটি ওই মূলনীতির ফলাফল। বলা হয়েছে- প্রত্যেকে তাই পাবে, যা সে নিয়ত করে। অর্থাৎ কোনও আমল দ্বারা যদি আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি কামনা করে, তবে সেই আমল দ্বারা সে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ করবে। পক্ষান্তরে যদি উদ্দেশ্য থাকে সুনাম-সুখ্যাতি লাভ করা বা মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করা কিংবা টাকা-পয়সা ও ধন-দৌলত হাসিল করা, তবে ওই আমল দ্বারা সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে না। বাহ্যদৃষ্টিতে সে আমল যতই সুন্দর হোক না কেন, তাতে সে কোনও ছওয়াব পাবে না। এবং আখিরাতে তার বিনিময়ে তার কিছুই অর্জিত হবে না।
অতঃপর হিজরত দ্বারা ভালোমন্দ নিয়তের দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। হিজরত মানে পরিত্যাগ করা। পরিভাষায় দীন ও ঈমান হেফাজতের উদ্দেশ্যে কুফরের দেশ পরিত্যাগ করে ইসলামী দেশে গমন করাকে হিজরত বলা হয়। যে-কোনও মন্দ কাজ পরিত্যাগকেও হিজরত বলে। যে ব্যক্তি হিজরত করে, তাকে বলা হয় মুহাজির। এক হাদীছে আছে- প্রকৃত মুহাজির সেই; যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী পরিত্যাগ করে চলে। এর মধ্যে শরীআতের সমস্ত আদেশ-নিষেধ এসে যায়। কেননা শরীআতের আদিষ্ট বিষয়াবলী পালন করতে হলে মনের খেয়াল-খুশি পরিত্যাগ করতে হয়। অনুরূপ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে দূরে থাকার জন্যও মনের বিরোধিতা করা অপরিহার্য হয়। সুতরাং ব্যাপক অর্থে হিজরত এমন এক আমল, গোটা শরীআতই যার অন্তর্ভুক্ত। তবে এ হাদীছে হিজরত দ্বারা বিশেষভাবে দেশত্যাগকেই বোঝানো হয়েছে।
তো এই হিজরত এমন এক আমল, নিয়তের ভালোমন্দ দ্বারা যার ভালোমন্দ সাব্যস্ত হয়। উভয় অবস্থায় এর বাহ্যিক রূপ একই থাকে। ফলে বাহ্যিক রূপ দ্বারা এর ভালোমন্দ ও শুদ্ধাশুদ্ধ নির্ণয় করা যায় না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
