মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
১. ঈমান-আকাঈদ অধ্যায়
হাদীস নং: ৬
মুশরিক লোকদের সন্তানদের ব্যাপারে কোনরূপ ফয়সালা না দিয়ে বিরত থাকা
৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ প্রত্যেকটি জন্মগ্রহণকারী শিশু স্বীয় ফিতরত বা প্রকৃতির উপর জন্মগ্রহণ করে থাকে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহুদী অথবা খ্রীস্টান বানিয়ে ফেলে। হুযূর (ﷺ)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! যে শিশু অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তার কি অবস্থা হবে? তখন হুযূর (ﷺ) বললেন, আল্লাহ্ ভাল জানেন যে, সে ভবিষ্যতে কি কাজ করত।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ الْأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالَ: " كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، قِيلَ: فَمَنْ مَاتَ صَغِيرًا يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ফিতরাতের দ্বারা প্রাকৃতিক স্বভাব বা সহজাত স্বভাব ও যোগ্যতাকে বুঝায়, যা নিয়ে প্রতিটি শিশু মায়ের গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করে থাকে। এর মধ্যে ভাল-মন্দ উভয়ের যোগ্যতা বিদ্যমান থাকে। যদি সে কুফর ও শিরকের সংমিশ্রণ থেকে পবিত্র থাকে এবং কুফরীর কর্মক্ষেত্র বা আশপাশ থেকে দূরে থাকে, তাহলে এর মধ্যে ঈমান কবূলের পূর্ণ যোগ্যতা তৈরি হয়ে থাকে এবং ঐ শিশু বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়ার পর নিজেই সিরাতে মুসতাকীম তথা সরল-সঠিক পথে চলতে পারে। যদি দুর্ভাগ্যবশতঃ তার পিতামাতা ইয়াহুদী-খ্রীস্টান বা অগ্নি উপাসক হয়ে থাকে, তাহলে তাদের প্রভাবে ঐ সন্তান সরল ও সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গোমরাহীর পথ গ্রহণ করে থাকে। হাদীসে এ ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
হাদীসের দ্বিতীয় অংশে একটি বিতর্কিত মাসআলার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তা হলো এই যে, কাফিরদের শিশু সন্তান শরীয়তের দৃষ্টিতে কি কাফির না মুমিন, জান্নাতী না জাহান্নামী । কেউ কেউ বলেন, এদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। ইমাম বায়হাকী এ বিষয়ে ইমাম শাফিঈ (র)-এর সাথে একমত পোষণ করে এটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছেন। ইমাম মালিক (র) থেকে এ বিষয়ে কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কতিপয় শাগরিদ বিষয়টিকে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, মুসলমানদের শিশু সন্তান জান্নাতী এবং মুশরিকদের শিশু সন্তানদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। কাযী আয়ায বলেছেন, ইমাম আহমদ (র)-এর মতে মুশরিকদের শিশু সন্তান জাহান্নামী হবে। ইমাম আবূ হানীফা (র) এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থেকেছেন। কেননা কোনদিকেই চূড়ান্ত ফয়সালা দেওয়া সম্ভব নয়। বস্তুতঃ বর্ণিত হাদীসে এ ধারণার দিকেই ইঙ্গিত করে হুযূর (সা) বলেছেন, আমরা জানি না যে, ভবিষ্যতে এ সন্তান কি করবে। নেককাজ করে জান্নাতী হবে, না অন্যায় কাজ করে জাহান্নামী হবে। সুতরাং এখানেই নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয়।
হাদীসের দ্বিতীয় অংশে একটি বিতর্কিত মাসআলার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তা হলো এই যে, কাফিরদের শিশু সন্তান শরীয়তের দৃষ্টিতে কি কাফির না মুমিন, জান্নাতী না জাহান্নামী । কেউ কেউ বলেন, এদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। ইমাম বায়হাকী এ বিষয়ে ইমাম শাফিঈ (র)-এর সাথে একমত পোষণ করে এটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছেন। ইমাম মালিক (র) থেকে এ বিষয়ে কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কতিপয় শাগরিদ বিষয়টিকে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, মুসলমানদের শিশু সন্তান জান্নাতী এবং মুশরিকদের শিশু সন্তানদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। কাযী আয়ায বলেছেন, ইমাম আহমদ (র)-এর মতে মুশরিকদের শিশু সন্তান জাহান্নামী হবে। ইমাম আবূ হানীফা (র) এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থেকেছেন। কেননা কোনদিকেই চূড়ান্ত ফয়সালা দেওয়া সম্ভব নয়। বস্তুতঃ বর্ণিত হাদীসে এ ধারণার দিকেই ইঙ্গিত করে হুযূর (সা) বলেছেন, আমরা জানি না যে, ভবিষ্যতে এ সন্তান কি করবে। নেককাজ করে জান্নাতী হবে, না অন্যায় কাজ করে জাহান্নামী হবে। সুতরাং এখানেই নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয়।
