আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ

হাদীস নং: ৪০৯৮
আন্তর্জতিক নং: ৪৪৪২

পরিচ্ছেদঃ ২২৪৭. নবী কারীম (ﷺ)- এর রোগ ও তাঁর ওফাত।

৪০৯৮। সাঈদ ইবনে উফায়র (রাহঃ) .... নবী সহধর্মিনী আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর রোগ প্রবল হল ও ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রুষা করার ব্যাপারে তাঁর বিবিগণের নিকট অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাঁকে অনুমতি দিলেন। তারপর নবী কারীম (ﷺ) ঘর থেকে বের হয়ে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ও অপর একজন সাহাবীর সাহায্যে জমীনের উপর পা হিঁচড়ে চলতে লাগলেন। উবাইদুল্লাহ্ (রাহঃ) বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)- কে আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ) কথিত ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত করলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি সেই দ্বিতীয় ব্যক্তি যার নাম আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ) উল্লেখ করেননি, তার নাম জান? আমি বললাম, না। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, তিনি হলেন আলী (রাযিঃ)।
নবী কারীম (ﷺ)- এর সহধর্মিনী আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাঁর ব্যথা বেড়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন সাত মশক যার মুখ এখনোও খোলা হয়নি, তা থেকে আমার শরীরে পানি ঢেলে দাও। যেন আমি (সুস্থ হয়ে) লোকদের উপদেশ দিতে পারি। এরপর আমরা তাঁকে নবী কারীম (ﷺ)- এর সহধর্মিনী হাফসা (রাযিঃ)- এর একটি বড় গামলায় বসালাম। তারপর আমরা উক্ত মশক হতে তাঁর উপর ততক্ষণ পর্যন্ত পানি ঢালা অব্যাহত রাখলাম, যতক্ষণ না তিনি তাঁর হাত দ্বারা আমাদের ইশারা করে জানালেন যে, তোমরা তোমাদের কাজ সম্পন্ন করেছ। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, তারপর নবী কারীম (ﷺ) লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সাথে জামাতে নামায আদায় করলেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন।
উবাইদুল্লাহ্ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা (রাহঃ) আমাকে জানালেন যে, আয়েশা ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) উভয়ে বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রোগ-যাতনায় অস্থির হতেন তখন তিনি তাঁর কালো চাঁদর দিয়ে নিজ মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতেন। আবার যখন জ্বরের উষ্ণতা হ্রাস পেত তখন মুখমণ্ডল থেকে চাঁদর সরিয়ে ফেলতেন। রাবী বলেন, এরূপ অবস্থায়ও তিনি বলতেন, ইহুদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লানত, তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিনত করেছে। তাদের কৃতকর্ম থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
উবাইদুল্লাহ্ (রাহঃ) বলেন যে, আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি আবু বকর (রাযিঃ)- এর ইমামতির ব্যাপারে নবী কারীম (ﷺ)- কে বারবার আপত্তি করেছি। আর আমার তাঁর কাছে বারবার আপত্তি করার কারণ ছিল এই, আমার অন্তরে একথা আসেনি যে, নবী কারীম (ﷺ)- এর পরে তাঁর স্থলে কেউ দাঁড়ালে লোকেরা তাকে পছন্দ করবে। বরং আমি মনে করতাম যে, কেউ তাঁর স্থলে দাঁড়ালে লোকেরা তাঁর প্রতি খারাপ ধারণা পোষন করবে, তাই আমি ইচ্ছা করলাম যে, নবী কারীম (ﷺ) এ দায়িত্ব আবু বকর (রাযিঃ)- এর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রদান করুন। আবু আব্দুল্লাহ বুখারী (রাহঃ) বলেন, এ হাদীস ইবনে উমর, আবু মুসা ও ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।


tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক নিষ্প্রয়োজন