আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৬৭
২০৭৩. নবী কারীম (ﷺ) সম্পর্কে বর্ণনা
৩৩১৫। হাসান ইবনে সাব্বাহ (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম (ﷺ) এমনভাবে (থেমে থেমে) কথা বলতেন যে, কোন গণনাকারী গণনা করতে চাইলে তাঁর কথাগুলো গণনা করতে পারত।
লাঈস (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তুমি অমুকের (আবু হুরায়রা (রাযিঃ)) অবস্থা দেখে কি অবাক হও না? তিনি এসে আমার হুজরার পাশে বসে আমাকে শুনিয়ে হাদীস বর্ণনা করেন। আমি তখন (নফল) নামাযে ছিলাম। আমার নামায শেষ হওয়ার পূর্বেই তিনি উঠে চলে যান। তাকে যদি আমি পেতাম তবে অবশ্যই তাকে সতর্ক করে দিতাম যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তোমাদের মত দ্রুত কথা বলতেন না (বরং তিনি ধীরস্থির ও স্পষ্টভাবে কথা বলতেন)।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু এ উম্মতের শিক্ষক ছিলেন এবং তাঁর প্রতিটি কথাই উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় ছিল, তাই তিনি প্রতিটি কথা বলতেন সুস্পষ্টভাবে। ফলে তাঁর কোনও কথা বুঝতে শ্রোতার কষ্ট হতো না। দীনী বিষয়ে যারা বক্তব্য দান করে, তাদের এদিকে লক্ষ রাখা দরকার। অনেকে বক্তব্যদানের সময় খুব তাড়াতাড়ি করে কথা বলে। শ্রোতার পক্ষে তা বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে যায়। বক্তব্য দান করাই তো হয় মানুষকে বোঝানোর জন্য। তারা যদি বুঝতেই না পারে, তবে সে বক্তব্যদানের সার্থকতা কী? কাজেই কোনও বক্তারই হড়বড় করে কথা বলা উচিত নয়। ধীরে ধীরে গুছিয়ে বলা উচিত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. কোনও কোনও বক্তার এরকম হড়বড় করে বলা বক্তব্য শুনে তাতে আপত্তি জানান। তিনি তাদের সংশোধনকল্পে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যের ধরন তাদের সামনে তুলে ধরেন এবং সে প্রসঙ্গেই এ হাদীছটি তিনি বর্ণনা করেন। হাদীসে আছে যে-
ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يسرد سردكم هذا، ولكنه كان يتكلم بكلام يبينه، فصل، يحفظه من جلس إليه
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মতো এরকম হড়বড় করতেন না। বরং তিনি সুস্পষ্টভাবে পরিষ্কার করে কথা বলতেন, তাঁর কাছে যারা বসত তারা মুখস্থ করে ফেলতে পারত।'(জামে' তিরমিযী: ৩৬৩৯; মুসনাদুল বাযযার ১৫৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৬৯৬; মুসনাদে ইসহাক ইবন রাহুয়াহ: ১৭০৪)

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

যে-কোনও কথা পরিষ্কারভাবে বলা উচিত, যাতে শ্রোতা তা ভালোভাবে বুঝতে পারে। শিক্ষকদের জন্য এটা আরও বেশি জরুরি।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন