আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪৮. নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৬১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬১৯
নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
পরিচ্ছেদ : নবী (ﷺ) এর বেলাদত
৩৬১৯. মুহাম্মাদ ইবন বাশ্শার আব্দী (রাহঃ)... কায়স ইবন মাখরামা (রাযিঃ) তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি পিতামহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি এবং রাসূলুল্লাহ্ উভয়েরই জন্ম হয়েছে আমুল ফীলে।*
উছমান ইবন আফফান (রাযিঃ) একবার ইয়া'মার ইবন লায়ছ গোত্রের ইবন আশয়াম (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেনঃ আপনি বড়, না রাসূলুল্লাহ্ বড়?
তিনি বললেনঃ বড় তো রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) , তবে জন্মের তারিখ আমারটা আগে। তিনি আরো বলেনঃ আমি (আবাবীল) পাখির সবুজ রংের পরিবর্তিত বিষ্ঠা দেখেছি।
أبواب المناقب عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
بَابُ مَا جَاءَ فِي مِيلَادِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
3619 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ العَبْدِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْحَاقَ، يُحَدِّثُ عَنْ المُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: «وُلِدْتُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الفِيلِ»، قَالَ: وَسَأَلَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ قُبَاثَ بْنَ أَشْيَمَ أَخَا بَنِي يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ: أَنْتَ أَكْبَرُ أَمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ: «رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكْبَرُ مِنِّي وَأَنَا أَقْدَمُ مِنْهُ فِي المِيلَادِ»، قَالَ: «وَرَأَيْتُ خَذْقَ الْفِيلِ أَخْضَرَ مُحِيلًا». هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৬২০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬২০
নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
পরিচ্ছেদ : নবী (ﷺ) এর বেলাদত
৩৬২০. ফযল ইবন সাহল আবুল আব্বাস আরাজ বাগদাদী (রাহঃ)... আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আবু তালিব একবার শামে (বাণিজ্যের) উদ্দেশ্যে বের হলেন। নবী ও আরো কতিপয় কুরায়শ দলপতিও তাঁর সঙ্গে বের হলেন। পথে এক খ্রীষ্টান সন্ন্যাসীর আশ্রমে যখন তারা পৌঁছলেন, তখন বিশ্রামের জন্য তাঁরা নামলেন। তাঁরা তাঁদের বাহন উটগুলো ছেড়ে দিলেন। ঐ সন্ন্যাসীও তাঁদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে এলেন। এর পূর্বেও তাঁরা এই আশ্রমের পাশ দিয়ে পথ অতিক্রম করতেন কিন্তু কখনও ঐ সন্ন্যাসী তাদের কাছে আশ্রম থেকে বের হয়ে আসতেন না বা তাঁদের দিকে দৃষ্টিপাতও করেননি। তিনি বললেন: এরা কারা এখানে কারার্তা থামিয়েছে। এরপর ঐ সন্ন্যাসী তাঁদের মাঝে পথ করে এগুতে লাগলেন। শেষে রাসূলুল্লাহ এর কাছে এলেন এবং তাঁর হাত ধরে বললেন: ইনিই হলেন সারা জাহানের সর্দার। ইনিই হলেন সারা জাহানের প্রভুর রাসূল। তাঁকে আল্লাহ তাআলা সারা জাহানের রহমত স্বরূপ প্রেরণ করবেন।

কুরায়শ দলপতিরা তাঁকে বলল : কি করে আপনি তা জানলেন?

তিনি বললেন: তোমরা যখন এই উপত্যকায় এসে থামলে, তখন কোন পাথর এবং কোন গাছই এমন। ছিল না যা সিজদায় লুটিয়ে পড়েনি। এরা কখনও নবী ব্যতীত আর কাউকে সিজদা করে না। আমি তাঁকে নবুওয়াতের মোহর মারফত চিনতে পেরেছি। সেটি হল তাঁর কাঁধের হাড়ের নীচে একটি সেবের ন্যায় দেখতে।

এরপর তিনি ফিরে গেলেন এবং এই কাফেলার জন্য খাদ্য প্রস্তুত করলেন। তিনি যখন তা নিয়ে তাঁদের কাছে এলেন তখন নবী উট চরাতে গিয়েছিলেন। সন্ন্যাসী তাঁকে ডেকে আনতে লোক পাঠালেন। নবী যখন আসছিলেন তখন তাঁর উপর একটি মেঘ ছায়া দান করছিল। তিনি কাফেলার লোকদের নিকট এসে দেখলেন যে তাঁরা তাঁর পূর্বেই গাছের ছায়ায় স্থান করে নিয়েছেন। যা হোক, তিনি বসলে গাছের ছায়া তাঁর দিকেই ঝুঁকে গেল। তখন সন্ন্যাসী বললেনঃ তোমরা লক্ষ্য করে দেখ যে, গাছের ছায়া তাঁর উপরেই চলে এসেছে।

সন্ন্যাসী তাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে রইলেন এবং কসম দিয়ে বললেন যে, তারা যেন নবীজীকে নিয়ে রোমানদের এলাকায় না যায়। কেননা তারা তাঁকে দেখলে আলামত দর্শনে তাঁকে চিনে ফেলবে। ফলে তারা তাঁকে হত্যা করে বসবে। অনন্তর তিনি (পথের দিকে তাকিয়ে দেখেন, রোম সাম্রাজ্যভুক্ত অঞ্চল থেকে সাতজন লোক এদিকে আসছে। তিনি এগিয়ে গিয়ে তাদের সামনা-সামনি হলেন। বললেন : আপনারা কি উদ্দেশ্যে এসেছেন? তারা বলল: আমরা এসেছি। কারণ, শেষ নবী এ মাসেই আবির্ভূত হবেন। সুতরাং সব ক'টি রাস্তায় কিছু কিছু লোক প্রেরণ করা হয়েছে। আমরাও তাঁর খবর পেয়েছি। আমাদেরকে আপনার এই পথে খোঁজ নেওয়ার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

সন্ন্যাসী বললেন : তোমাদের পিছনে তোমাদের চেয়েও উত্তম কেউ আছে কি?
তারা বলল। আপনার এই পথে তিনি আছেন বলে আমাদের খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ তোমরা কি মনে কর, আল্লাহ তা'আলা যদি কোন কাজ সম্পাদন করতে চান তবে কোন মানুষ কি তা রদ করতে সক্ষম হবে। তারা বললঃ না।

অনন্তর তারা তাঁর কাছে বায়'আত হল এবং তাঁর সঙ্গেই থেকে গেল। পরে উক্ত সন্ন্যাসী কাফেলার লোকদের বললেনঃ তোমাদের আল্লাহর কসম দিচ্ছি। তোমাদের মধ্যে তাঁর

(নবীজীর) অভিভাবক কে? এঁরা বললেন : আবু তালিব।

সন্ন্যাসী তাকে বার বার কসম দিয়ে এমনভাবে অনুরোধ করতে থাকলেন যে, শেষ পর্যন্ত আবু তালিব নবীজীকে (মক্কায়) ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। আবু বাকর তাঁর সঙ্গে বিলালকেও পাঠিয়ে দিলেন। সন্ন্যাসী তাঁকে

আটার পিঠা এবং যায়তুন তেল পাথেয় হিসাবে প্রদান করেন।
أبواب المناقب عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
باب ما جاء في ميلاد النبي صلى الله عليه وسلم
3620 - حَدَّثَنَا الفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ أَبُو العَبَّاسِ الأَعْرَجُ البَغْدَادِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ غَزْوَانَ قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «خَرَجَ أَبُو طَالِبٍ إِلَى الشَّامِ وَخَرَجَ مَعَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَشْيَاخٍ مِنْ قُرَيْشٍ، فَلَمَّا أَشْرَفُوا عَلَى الرَّاهِبِ هَبَطُوا فَحَلُّوا رِحَالَهُمْ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمُ الرَّاهِبُ وَكَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ يَمُرُّونَ بِهِ فَلَا يَخْرُجُ إِلَيْهِمْ وَلَا يَلْتَفِتُ» . قَالَ: " فَهُمْ يَحُلُّونَ رِحَالَهُمْ، فَجَعَلَ يَتَخَلَّلُهُمُ الرَّاهِبُ حَتَّى جَاءَ فَأَخَذَ بِيَدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: هَذَا سَيِّدُ العَالَمِينَ، هَذَا رَسُولُ رَبِّ العَالَمِينَ، يَبْعَثُهُ اللَّهُ رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ "، فَقَالَ لَهُ أَشْيَاخٌ مِنْ قُرَيْشٍ: مَا عِلْمُكَ، فَقَالَ: إِنَّكُمْ حِينَ أَشْرَفْتُمْ مِنَ العَقَبَةِ لَمْ يَبْقَ شَجَرٌ وَلَا حَجَرٌ إِلَّا خَرَّ سَاجِدًا وَلَا يَسْجُدَانِ إِلَّا لِنَبِيٍّ، وَإِنِّي أَعْرِفُهُ بِخَاتَمِ النُّبُوَّةِ أَسْفَلَ مِنْ غُضْرُوفِ كَتِفِهِ مِثْلَ التُّفَّاحَةِ، ثُمَّ رَجَعَ فَصَنَعَ لَهُمْ طَعَامًا، فَلَمَّا أَتَاهُمْ بِهِ وَكَانَ هُوَ فِي رِعْيَةِ الإِبِلِ، قَالَ: أَرْسِلُوا إِلَيْهِ، فَأَقْبَلَ وَعَلَيْهِ غَمَامَةٌ تُظِلُّهُ، فَلَمَّا دَنَا مِنَ القَوْمِ وَجَدَهُمْ قَدْ سَبَقُوهُ إِلَى فَيْءِ الشَّجَرَةِ، فَلَمَّا جَلَسَ مَالَ فَيْءُ الشَّجَرَةِ عَلَيْهِ، فَقَالَ: انْظُرُوا إِلَى فَيْءِ الشَّجَرَةِ مَالَ عَلَيْهِ، قَالَ: فَبَيْنَمَا هُوَ قَائِمٌ عَلَيْهِمْ وَهُوَ يُنَاشِدُهُمْ أَنْ لَا يَذْهَبُوا بِهِ إِلَى الرُّومِ، فَإِنَّ الرُّومَ إِنْ رَأَوْهُ عَرَفُوهُ بِالصِّفَةِ فَيَقْتُلُونَهُ، فَالتَفَتَ فَإِذَا بِسَبْعَةٍ قَدْ أَقْبَلُوا مِنَ الرُّومِ فَاسْتَقْبَلَهُمْ، فَقَالَ: مَا جَاءَ بِكُمْ؟ قَالُوا: جِئْنَا، إِنَّ هَذَا النَّبِيَّ خَارِجٌ فِي هَذَا الشَّهْرِ، فَلَمْ يَبْقَ طَرِيقٌ إِلَّا بُعِثَ إِلَيْهِ بِأُنَاسٍ وَإِنَّا قَدْ أُخْبِرْنَا خَبَرَهُ فَبُعِثْنَا إِلَى طَرِيقِكَ هَذَا، فَقَالَ: هَلْ خَلْفَكُمْ أَحَدٌ هُوَ خَيْرٌ مِنْكُمْ؟ قَالُوا: إِنَّمَا أُخْبِرْنَا خَبَرَهُ بِطَرِيقِكَ هَذَا. قَالَ: أَفَرَأَيْتُمْ أَمْرًا أَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَقْضِيَهُ هَلْ يَسْتَطِيعُ أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ رَدَّهُ؟ قَالُوا: لَا، قَالَ: فَبَايَعُوهُ وَأَقَامُوا مَعَهُ قَالَ: أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ أَيُّكُمْ وَلِيُّهُ؟ قَالُوا: أَبُو طَالِبٍ، فَلَمْ يَزَلْ يُنَاشِدُهُ حَتَّى رَدَّهُ أَبُو طَالِبٍ وَبَعَثَ مَعَهُ أَبُو بَكْرٍ بِلَالًا وَزَوَّدَهُ الرَّاهِبُ مِنَ الكَعْكِ وَالزَّيْتِ ": «هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ هَذَا الوَجْهِ»