আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৩. বিতর নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৪৮১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৮১
সালাতুত তাসবীহ।
৪৮১. আহমদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুসা (রাহঃ) ..... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) একবার রাসূল (ﷺ) থেকে ওয়াদা নিলেন। বললেনঃ আমাকে এমন কতগুলি কালেমা শিখিয়ে দিন যা আমি আমার নামাযে পাঠ করব। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ দশবার আল্লাহু আকবার, দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করবে। পরে তোমার মন যা চায় তা আল্লাহর নিকট চাইবে। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ।

এই বিষয়ে ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর, ফযল ইবনে আব্বাস ও আবু রাফি’ (রাযিঃ) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ আনাস (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-গারীব। সালাতুত তাসবীহ সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) থেকে একাধিক হাদীস বর্ণিত আছে। কিন্তু এর অধিকাংশই সহীহ নয়। ইবনে মুবারকসহ একাধিক আলিম সালাতুত তাসবীহ সম্পর্কে রিওয়ায়াত করেছেন এবং এই বিষয়ে ফযীলতের উল্লেখ করেছেন। আহমদ ইবনে আব্দা আয্-যাববী (রাহঃ) বর্ণনা করেন যে, আবু ওয়াহব বলেন, আমি ইবনে মুবারক (রাহঃ)-কে যে নামায (অতিরিক্ত) তাসবীহ পাঠ করা হয়, সে নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বললেনঃ তাকবীর বলার পর বলবেঃ

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ পরে পনেরবার পাঠ করবে: سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ পরে আউযুবিল্লাহ্- বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম, পরে সূরা ফাতিহা ও অন্যা একটি সূরা পাঠ করে দশবার পাঠ করবেঃ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ পরে রুকূতে যেয়ে দশবার, রুকূ থেকে মাথা তুলে দশবার, সিজদায় গিয়ে দশবার, সিজদা থেকে মাথা তুলে দশবার। দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে দশবার পাঠ করবে। এইভাবে চার রাকআত আদায় করবে। এতে প্রতি রাকআতে মোট পঁচাত্তরবার তাসবীহ পাঠ করা হবে। পনরবার তাসবীহ পাঠের মাধ্যমে শুরু হবে প্রতি রাকআত। পরে কির’আত হবে, এরপর হবে দশবার তাসবীহ পাঠ। রাতে এই নামায আদায় করা হলে প্রতি দু’রাকআত পর সালাম ফিরান আমার নিকট অধিক প্রিয় বলে গণ্য। আর দিনে আদায় করা হলে ইচ্ছা করলে দু’রাকআত পর সালাম ফিরাতেও পার, ইচ্ছা হলে না-ও ফিরাতে পার।

আবু ওয়াহব (রাহঃ) বলেন, আব্দুল আযীয ইবনে আবী রিযমা (রাহঃ) আমাকে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ রুকুতে প্রথমে সুবহানা রাব্বিআল আযীম এবং সিজদায় প্রথমে সুবহানা রাব্বিআল আলা তিনবার পাঠ করে নিবে এরপর উক্ত তাসবীহসমূহ পাঠ করবে। আহমদ ইবনে আব্দা (রাহঃ) আব্দুল আযীয ইবনে আবী রিযমা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রাহঃ)-কে বললাম, যদি এই নামাযে কারো সাহু হয়ে যায়, তবে সিজদা সাহু-এও কি দশবার করে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে? তিনি বললেনঃ না, কারণ এই নামাযে মোট তাসবীহের সংখ্যা হল তিনশত।
باب مَا جَاءَ فِي صَلاَةِ التَّسْبِيحِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ أُمَّ سُلَيْمٍ، غَدَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ عَلِّمْنِي كَلِمَاتٍ أَقُولُهُنَّ فِي صَلاَتِي . فَقَالَ " كَبِّرِي اللَّهَ عَشْرًا وَسَبِّحِي اللَّهَ عَشْرًا وَاحْمَدِيهِ عَشْرًا ثُمَّ سَلِي مَا شِئْتِ يَقُولُ نَعَمْ نَعَمْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ حَدِيثٍ فِي صَلاَةِ التَّسْبِيحِ وَلاَ يَصِحُّ مِنْهُ كَبِيرُ شَيْءٍ . وَقَدْ رَأَى ابْنُ الْمُبَارَكِ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ صَلاَةَ التَّسْبِيحِ وَذَكَرُوا الْفَضْلَ فِيهِ . حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ حَدَّثَنَا أَبُو وَهْبٍ قَالَ سَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْمُبَارَكِ عَنِ الصَّلاَةِ الَّتِي يُسَبَّحُ فِيهَا فَقَالَ يُكَبِّرُ ثُمَّ يَقُولُ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ ثُمَّ يَقُولُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثُمَّ يَتَعَوَّذُ وَيَقْرَأُ (بِسمِ الله الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ) وَفَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةً ثُمَّ يَقُولُ عَشْرَ مَرَّاتٍ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثُمَّ يَرْكَعُ فَيَقُولُهَا عَشْرًا . ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَيَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ يَسْجُدُ فَيَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ يَسْجُدُ الثَّانِيَةَ فَيَقُولُهَا عَشْرًا يُصَلِّي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ عَلَى هَذَا فَذَلِكَ خَمْسٌ وَسَبْعُونَ تَسْبِيحَةً فِي كُلِّ رَكْعَةٍ يَبْدَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِخَمْسَ عَشْرَةَ تَسْبِيحَةً ثُمَّ يَقْرَأُ ثُمَّ يُسَبِّحُ عَشْرًا فَإِنْ صَلَّى لَيْلاً فَأَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ يُسَلِّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ وَإِنْ صَلَّى نَهَارًا فَإِنْ شَاءَ سَلَّمَ وَإِنْ شَاءَ لَمْ يُسَلِّمْ . قَالَ أَبُو وَهْبٍ وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي رِزْمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّهُ قَالَ يَبْدَأُ فِي الرُّكُوعِ بِسُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ وَفِي السُّجُودِ بِسُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ثَلاَثًا ثُمَّ يُسَبِّحُ التَّسْبِيحَاتِ . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ وَحَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ زَمْعَةَ قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ وَهُوَ ابْنُ أَبِي رِزْمَةَ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ إِنْ سَهَا فِيهَا يُسَبِّحُ فِي سَجْدَتَىِ السَّهْوِ عَشْرًا عَشْرًا قَالَ لاَ إِنَّمَا هِيَ ثَلاَثُمِائَةِ تَسْبِيحَةٍ .
হাদীস নং:৪৮২
আন্তর্জাতিক নং: ৪৮২
সালাতুত তাসবীহ।
৪৮২. আবু কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আ’লা (রাহঃ) ..... আবু রাফি’ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (ﷺ) একদিন আব্বাস (রাযিঃ)-কে বললেনঃ হে আমার পিতৃব্য! আপনাকে কি আত্মীয়তার হক আদায় হিসাবে একটি জিনিস দিব, আপনাকে কি একটি বস্তু দান করব, আপনাকে কি উপকৃত করব? আব্বাস (রাযিঃ) বললেনঃ অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ। রাসূল (ﷺ) বললেনঃ হে পিতৃব্য! এমন ভাবে চার রাকআত নামায আদায় করবেন যে, প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পাঠ করে রুকূর পূর্বে পনেরবার পাঠ করবেন। এরপর রুকূ করে তাতে পাঠ করবেন দশবার, পরে রুকূ থেকে মাথা তুলে পাঠ করবেন দশবার, পরে সিজদা করে পাঠ করবেন দশবার, পরে সিজদা থেকে মাথা তুলে পাঠ করবেন দশবার, পরে আবার সিজদা করে পাঠ করবেন দশবার, সিজদা থেকে মাথা তুলে কিয়ামের পূর্বে পাঠ করবেন দশবার। এইভাবে প্রতি রাকআত হবে পঁচাত্তরবার, আর চার রাকআতে হবে মোট তিনশতবার। আপনার পাপরাশি স্তুপ দিয়ে সাজান বালুকারাশির টিলার মত যদি হয়, তবূও এতে আল্লাহ্ তাআলা তা মাফ করে দিবেন। আব্বাস (রাযিঃ) বললেনঃ হে্ আল্লাহর রাসূল! এমন কে আছে যে প্রতিদিন তা পাঠ করতে সক্ষম হবে? রাসূল (ﷺ) বললেনঃ যদি প্রতিদিন আপনি তা না পারেন তবে প্রতি সাপ্তাহে একবার করবেন। প্রতি সপ্তাহে একবার করে না পারলে প্রতি মাসে একবার। রাসূল (ﷺ) এইভাবে বলতে বলতে শেষে বললেনঃ অন্তত বছরে একবার তা পাঠ করবেন। - ইবনে মাজাহ ১৩৮৬

ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি আবু রাফি’ থেকে বর্ণিত গারীব হাদীস।
باب مَا جَاءَ فِي صَلاَةِ التَّسْبِيحِ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ الْعُكْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلْعَبَّاسِ " يَا عَمِّ أَلاَ أَصِلُكَ أَلاَ أَحْبُوكَ أَلاَ أَنْفَعُكَ " . قَالَ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " يَا عَمِّ صَلِّ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ فَإِذَا انْقَضَتِ الْقِرَاءَةُ فَقُلِ اللَّهُ أَكْبَرُ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً قَبْلَ أَنْ تَرْكَعَ ثُمَّ ارْكَعْ فَقُلْهَا عَشْرًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا ثُمَّ اسْجُدْ فَقُلْهَا عَشْرًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا ثُمَّ اسْجُدِ الثَّانِيَةَ فَقُلْهَا عَشْرًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا قَبْلَ أَنْ تَقُومَ فَتِلْكَ خَمْسٌ وَسَبْعُونَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ وَهِيَ ثَلاَثُمِائَةٍ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ فَلَوْ كَانَتْ ذُنُوبُكَ مِثْلَ رَمْلِ عَالِجٍ لَغَفَرَهَا اللَّهُ لَكَ " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنْ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقُولَهَا فِي كُلِّ يَوْمٍ قَالَ " فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ أَنْ تَقُولَهَا فِي كُلِّ يَوْمٍ فَقُلْهَا فِي جُمُعَةٍ فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ أَنْ تَقُولَهَا فِي جُمُعَةٍ فَقُلْهَا فِي شَهْرٍ " . فَلَمْ يَزَلْ يَقُولُ لَهُ حَتَّى قَالَ " فَقُلْهَا فِي سَنَةٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي رَافِعٍ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা