মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২৮৭১

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়
২৮৭১। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আমি নকী' নামক স্থানে উট বিক্রি করিতাম দীনারে (স্বর্ণ-মুদ্রায়)। মূল্য গ্রহণকালে আমি ঐ স্বর্ণ-মুদ্রার স্থলে ক্রেতার নিকট হইতে দেরহাম (রৌপ্য-মুদ্রা) গ্রহণ করিতাম। কোন সময় রৌপ্য মুদ্রায় বিক্রি করিয়া উহার স্থলে স্বর্ণ-মুদ্রা গ্রহণ করিতাম। আমি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া ঐ বিষয়ের উল্লেখ করিলাম। তিনি বলিলেনঃ ঐরূপ বদল গ্রহণে দোষ নাই। অবশ্য স্বর্ণ-মুদ্রা ও রৌপ্য মুদ্রার উপস্থিত বিনিময়-হার অনুযায়ী সম্পূর্ণটুকু ঐ স্থানেই হস্তগত করিতে হইবে। কোন অংশও বাকী রাখিয়া ক্রেতা বিক্রেতা পরস্পর পৃথক হইতে পারিবে না । —তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী ও দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৭২

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়
২৮৭২। হযরত আদ্দা ইবনে খালেদ ইবনে হাওয়া (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি একটি লেখা বাহির করিলেন, যাহাতে (একটি ক্রীতদাস বা দাসীর হুলিয়া) লিখিত ছিল—ইহা ক্রয় করিল আদ্দা ইবনে খালেদ ইবনে হাওয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে। সে তাঁহার নিকট হইতে একটি ক্রীতদাস বা দাসী ক্রয় করিয়াছে— যাহা কোন প্রকার দোষযুক্ত নহে, বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নাই, বিক্রি হওয়ার অযোগ্য পাত্র নহে। দুই মুসলমানের পরস্পরের ক্রয়-বিক্রয়ের ন্যায় (সত্য ও সরলভাবে এই ক্রয়-বিক্রয় হইল)। —তিরমিযী, তিনি বলিয়াছেন, এই হাদীস গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৭৩

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়
২৮৭৩। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি পেয়ালা ও একখণ্ড কম্বল বিক্রি করিতে চাহিলেন। তিনি ক্রেতা আহ্বানে বলিতে লাগিলেন, এই পেয়ালা ও কম্বল খণ্ড কে ক্রয় করিবে ? এক ব্যক্তি বলিল, আমি উভয়টিকে এক দেরহামে (রৌপ্য মুদ্রায়) ক্রয় করিতে পারি। নবী করীম (ﷺ) (নিলামের ডাক আকারে) বলিলেন, এক দেরহামের বেশী কে দিবে? এক ব্যক্তি বলিল, আমি দুই দেরহামে ক্রয় করিতে পারি। তিনি ঐ ব্যক্তির নিকট উহা বিক্রি করিয়া দিলেন। —তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৭৫

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তসমূহ
২৮৭৫। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কোন খেজুর বাগান ক্রয় করে উহার 'তাবীর' করিয়া সারার পর, সেই ক্ষেত্রে ঐ বাগানের বর্তমান ফল বিক্রেতার স্বত্ব হইবে। অবশ্য যদি ক্রেতার জন্য হওয়া শর্ত করা হয়। যে ব্যক্তি কোন ক্রীতদাস ক্রয় করে, ঐ ক্রীতদাসের সংশ্লিষ্টে কোন মাল রহিয়াছে, সেই মাল বিক্রেতার হইবে। অবশ্য যদি ক্রেতার জন্য হওয়া শর্ত করা হয়। মুসলিম আর বোখারী শুধু প্রথম অংশ বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৭৬

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তসমূহ
২৮৭৬। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একদা তিনি তাহার একটি উটের উপর আরোহণ করিয়া চলিতেছিলেন; উটটি নিতান্তই ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এমতাবস্থায় নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার নিকট দিয়া গেলেন এবং উটটিকে আঘাত করিলেন। তাহাতে উটটি এমন দ্রুত গতিতে চলিতে লাগিল যে, ঐরূপ চলিতে সে সক্ষম ছিল। না। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) বলিলেন, উটটি আমার নিকট চল্লিশ দেরহামে (রৌপ্য মুদ্রায়) বিক্রি করিয়া ফেল। তিনি বলেন, সেমতে আমি উহা বিক্রি করিলাম, কিন্তু এই শর্ত করিলাম যে, আমি বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছিতে ইহার উপর আরোহণ করিব।
মদীনায় পৌঁছিবার পর আমি উট টি লইয়া নবীজীর নিকট উপস্থিত হইলাম; তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন। অপর এক বর্ণনায় আছে—তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন এবং তারপর উটটিও আমাকে ফেরত দিয়া দিলেন। – মোত্তাঃ
বোখারীর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বেলাল (রাঃ)-কে বলিলেন, তাহাকে তাহার প্রাপ্য আদার করিয়া দাও এবং কিছু অতিরিক্তও প্রদান কর। সেমতে বেলাল (রাঃ) জাবের (রাঃ)-কে তাঁহার প্রাপ্য (চল্লিশ দেরহাম পরিমাণ রৌপ্য) প্রদান করিলেন এবং অতিরিক্ত এক কীরাত (পরিমাণ বিশেষ) দিলেন।
মদীনায় পৌঁছিবার পর আমি উট টি লইয়া নবীজীর নিকট উপস্থিত হইলাম; তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন। অপর এক বর্ণনায় আছে—তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন এবং তারপর উটটিও আমাকে ফেরত দিয়া দিলেন। – মোত্তাঃ
বোখারীর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বেলাল (রাঃ)-কে বলিলেন, তাহাকে তাহার প্রাপ্য আদার করিয়া দাও এবং কিছু অতিরিক্তও প্রদান কর। সেমতে বেলাল (রাঃ) জাবের (রাঃ)-কে তাঁহার প্রাপ্য (চল্লিশ দেরহাম পরিমাণ রৌপ্য) প্রদান করিলেন এবং অতিরিক্ত এক কীরাত (পরিমাণ বিশেষ) দিলেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৭৭

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তসমূহ
২৮৭৭। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, বরীরা ([ রাঃ] নাম্নী এক ক্রীতদাসী) একদা আমার নিকট আসিয়া বলিল, প্রতি বৎসরে চল্লিশ দেরহাম হিসাবে নয় বৎসরে ৩৬০ দেরহাম মালিককে আদায় করিয়া আমি মুক্ত হওয়ার লিখিত অঙ্গীকারপত্র সম্পাদন করিয়াছি। উহার জন্য আমাকে সাহায্য করুন। আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, তোমার মালিক যদি পছন্দ করে (এবং তুমিও রাযী হও) যে, সমুদয় দেরহাম একসঙ্গে আদায় করিয়া আমি তোমাকে (ক্রয় করত) মুক্ত করিয়া
দিব—তাহা আমি করিতে পারি এবং সেমতে তোমার মুক্তিদান সূত্রীয় উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারিণী গণ্য হইব আমি।
বরীরা (রাঃ) তাহার মালিকের নিকট এই কথা ব্যক্ত করিলে তাহারা তাহা প্রত্যাখ্যান করিল এবং বলিল, যদি উক্ত উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারী আমাদেরকে করা হয়, তবে আমরা রাযী আছি। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমুদয় বৃত্তান্ত শ্রবণান্তে (আয়েশা [রাঃ]-কে বলিলেন, তুমি ক্রয় করিয়া নেও এবং মুক্ত কর। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদিগকে একত্র করিয়া ভাষণদানে দাঁড়াইলেন। সেমতে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করিলেন এবং বলিলেন, অতঃপর এক শ্রেণীর লোকের এই অভ্যাস কেন যে, তাহারা এইরূপ শর্ত আরোপ করে যাহা আল্লাহ্ প্রদত্ত শরীঅতে নাই? (যথা—যে ব্যক্তি ক্রীতদাস ক্রয় করিয়া আযাদ করিবে, সেই সূত্রে উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারী সে-ই হইবে; ঐরূপ ক্ষেত্রে উক্ত স্বত্বের অধিকার বিক্রেতার জন্য শর্ত করা শরীঅতে নাই।)
আল্লাহ্ প্রদত্ত শরীঅতবিরোধী যে কোন শর্তই করা হইবে, তাহা বাতিল গণ্য হইবে; ঐরূপ একশত শর্ত করিলেও সবই বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। আল্লাহ্ তা'আলার বিধানই অগ্রগণ্য এবং আল্লাহ্ তা'আলার দেওয়া শর্তই সর্বাধিক মজবুত। নিশ্চয় মুক্ত করা সূত্রের উত্তরাধিকার-স্বত্ব একমাত্র মুক্তকারীর জন্যই সাব্যস্ত থাকিবে। — মোত্তাঃ
দিব—তাহা আমি করিতে পারি এবং সেমতে তোমার মুক্তিদান সূত্রীয় উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারিণী গণ্য হইব আমি।
বরীরা (রাঃ) তাহার মালিকের নিকট এই কথা ব্যক্ত করিলে তাহারা তাহা প্রত্যাখ্যান করিল এবং বলিল, যদি উক্ত উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারী আমাদেরকে করা হয়, তবে আমরা রাযী আছি। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমুদয় বৃত্তান্ত শ্রবণান্তে (আয়েশা [রাঃ]-কে বলিলেন, তুমি ক্রয় করিয়া নেও এবং মুক্ত কর। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদিগকে একত্র করিয়া ভাষণদানে দাঁড়াইলেন। সেমতে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করিলেন এবং বলিলেন, অতঃপর এক শ্রেণীর লোকের এই অভ্যাস কেন যে, তাহারা এইরূপ শর্ত আরোপ করে যাহা আল্লাহ্ প্রদত্ত শরীঅতে নাই? (যথা—যে ব্যক্তি ক্রীতদাস ক্রয় করিয়া আযাদ করিবে, সেই সূত্রে উত্তরাধিকার-স্বত্বের অধিকারী সে-ই হইবে; ঐরূপ ক্ষেত্রে উক্ত স্বত্বের অধিকার বিক্রেতার জন্য শর্ত করা শরীঅতে নাই।)
আল্লাহ্ প্রদত্ত শরীঅতবিরোধী যে কোন শর্তই করা হইবে, তাহা বাতিল গণ্য হইবে; ঐরূপ একশত শর্ত করিলেও সবই বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। আল্লাহ্ তা'আলার বিধানই অগ্রগণ্য এবং আল্লাহ্ তা'আলার দেওয়া শর্তই সর্বাধিক মজবুত। নিশ্চয় মুক্ত করা সূত্রের উত্তরাধিকার-স্বত্ব একমাত্র মুক্তকারীর জন্যই সাব্যস্ত থাকিবে। — মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮৮৩

পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - অগ্রিম বিক্রয় করা এবং বন্ধক রাখা
২৮৮৩। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় পদার্পণ করিলেন, তখন মদীনাবাসীগণ এক, দুই এবং তিন বৎসরের মেয়াদে বিভিন্ন প্রকার ফল ক্রয়-বিক্রয় করিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, যে কেহ অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করিবে, তাহাকে নির্ধারিত পরিমাপে বা নির্ধারিত ওজনে এবং নির্ধারিত মেয়াদে উহা করিতে হইবে।—মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান