মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ১২৯৫
details icon

পরিচ্ছেদঃ ৩৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত)

মূলে 'কিয়ামু শাহরে রামাযান' শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ, 'রমযান মাসের নামায' অর্থাৎ, তারাবীর নামায।
এখানে তিনটি কথা জানা আবশ্যক। তারাবী কত রাকআত তারাবী পড়া কি এবং তারাবী জামাআতে পড়া কেমন ?
(ক) ইবনে হাব্বানের কিতাবে হযরত জাবের প্রমুখাৎ বর্ণিত আছে, “নবী করীম (ﷺ) তাঁহাদের লইয়া তারাবী আট রাকআত পড়িয়াছিলেন।” কিন্তু ইবনে আবী শায়বার ‘মুসান্নাফ্’-এ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস কর্তৃক বর্ণিত এক হাদীসে আছে, হুযূর (ﷺ) তারাবী বিশ রাকআত পড়িয়াছিলেন। এই হাদীসটিকে কোন কোন মোহাদ্দেস সনদগত যয়ীফ বলিলেও ইহার মর্ম সহীহ্। কারণ, ইমাম বায়হাকীর এক সহীহ্ বর্ণনায় আছে, “হযরত ওমর, হযরত ওসমান ও হযরত আলীর যমানায় তারাবী বিশ রাকআত পড়া হইত।”
এখানে বিবেচ্য বিষয় এই যে, যদি হুযূর (ﷺ) কখনও বিশ রাকআত না-ই পড়িয়া থাকেন অথবা উহার অনুমতিই না দিয়া থাকেন, তাহা হইলে ইহারা এ ব্যাপারে এ সাহস করিবেন কেন এবং অপর সাহাবীগণও ইহাতে চুপ থাকিবেন কেন? ইহাতে বুঝা যায় যে, হুযূর (ﷺ) প্রথম দিকে আট রাকআত পড়িলেও শেষের দিকে বিশ রাকআতই পড়িয়াছিলেন। সুতরাং হাদীসটির মর্ম সহীহ্। আর ইমাম আ'যম আবু হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ইহাকেই গ্রহণ করিয়াছেন।
(খ) ইমাম আবু হানীফা, শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মতে তারাবী ‘সুন্নতে মোআক্কাদা।' ইয়োর কিতাবে আছে, একদা ইমাম আবু ইউসুফ (রঃ) ইমাম আবু হানীফাকে তারাবী এবং উহা সম্পর্কে হযরত ওমর (রাঃ) যে ব্যবস্থা করিয়াছেন তৎসম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলেন। উত্তরে ইমাম সাহেব বলিলেন, তারাবী সুন্নতে মোআক্কাদা। হযরত ওমর (রাঃ) ইহা নিজের মনগড়া মতে করেন নাই এবং তিনি বেদআতীও (দ্বীনের ব্যাপারে নূতন কথা আবিষ্কারক) ছিলেন না।
(গ) তারাবীর নামায একা পড়া জায়েয; কিন্তু জামাআতে পড়াই উত্তম। কেননা, ইহাতে আলস্যের কারণে নামায ফউত হইবার আশংকা থাকে না। নবী করীম (ﷺ) উহা সর্বদা জামাআতে না পড়িলেও হযরত আবু যর গেফারীর হাদীসে (১২২৪) দেখা যায়, তিনি কয়েক দিন উহা জামাআতে পড়িয়াছিলেন এবং ফরয হওয়ার আশংকায় পরে জামাআত ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। তাঁহার ওফাতের পর অর্থাৎ, ফরয হওয়ার আশংকা দূরীভূত হওয়ার পর হযরত ওমর (রাঃ) উহার জন্য নিয়মিত জামাআতের ব্যবস্থা করিয়া দেন। সুতরাং ইহা কখনও সুন্নতের খেলাফ নহে। —অনুবাদক
১২৯৫। হযরত যায়দ ইবনে সাবেত (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মসজিদে মাদুর দ্বারা একটি হুজরা প্রস্তুত করিলেন এবং তথায় কয়েক রাত্রি (নফল) নামায পড়িলেন, যাহাতে লোকসকল তাহার নিকট একত্রিত হইতে লাগিল। অতঃপর এক রাত্রি সাহাবীগণ তাঁহার কোন সাড়া-শব্দ পাইলেন না এবং ধারণা করিলেন যে, তিনি হয়তো ঘুমাইয়া আছেন; অতএব, তাঁহাদের কেহ কেহ গলা খাকাইতে লাগিলেন— যেন তিনি তাহাদের নিকট (জামাআতের জন্য) বাহির হইয়া আসেন। ইহা দেখিয়া তিনি বলিয়া উঠিলেন, আমি তোমাদের বরাবরের (আগ্রহের) অবস্থা দেখিয়াছি এবং আশংকা করিতেছি যে, ইহা যেন তোমাদের উপর ফরয হইয়া না যায়। আর যদি ফরয হইয়া যায়, তাহা হইলে তোমরা উহা পালন করিতে পারিবে না। সুতরাং হে লোকসকল! তোমরা (নফল) নামায তোমাদের ঘরেই পড়। কেননা, কাহারও উত্তম নামায হইতেছে তাহার ঘরের নামায ফরয নামায ব্যতীত। – মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান