আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ

موطأ الإمام مالك برواية الإمام محمد بن الحسن الشيباني

৮- তালাক ও আনুষঙ্গিক অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৬০৩
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৩ । ইবনে শিহাব (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। হারিছ ইবনে হিশাম-কন্যা উম্মে হাকীম (রাযিঃ) আবু জাহলের পুত্র ইকরামার স্ত্রী ছিলেন। মক্কা বিজয়ের দিন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু ইকরামা ইসলাম থেকে পলায়ন করে ইয়ামানে চলে যান। উম্মে হাকীম (রাযিঃ) ইয়ামান রওনা হলেন এবং তার কাছে গিয়ে পৌঁছলেন। তিনি স্বামীকে ইসলামের দিকে আহবান করলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন, অতঃপর নবী ﷺ -এর কাছে এসে উপস্থিত হলেন। নবী ﷺ তাকে দেখে আনন্দিত মনে তার দিকে দৌড়ে এলেন এবং তার উপর নিজের চাদর নিক্ষেপ করলেন, অতঃপর তাকে বাইআত করলেন।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, স্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করলে এবং স্বামী কাফের অবস্থায় ইসলামী রাষ্ট্রে থেকে গেলে, তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ করবে না। বরং তার সামনে দীন ইসলামকে পেশ করতে হবে। যদি সে ইসলাম কবুল করে তাহলে সে তার স্ত্রী হিসাবেই থেকে যাবে। কিন্তু ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিবাহ ভেঙ্গে দিতে হবে। আর এটা এক বায়েন তালাক গণ্য হবে। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) এবং ইবরাহীম নাখঈর এই মত।
بابُ الْمَرْأَةِ تُسْلِمُ قَبْلَ زَوْجِهَا
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، أَنَّ أُمَّ حَكِيمٍ بِنْتَ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ كَانَتْ تَحْتَ عِكْرِمَةَ بْنِ أَبِي جَهْلٍ فَأَسْلَمَتْ يَوْمَ الْفَتْحِ، وَخَرَجَ عِكْرِمَةُ هَارِبًا مِنَ الإِسْلامِ حَتَّى قَدِمَ الْيَمَنَ، فَارْتَحَلَتْ أُمُّ حَكِيمٍ حَتَّى قَدِمَتْ فَدَعَتْهُ إِلَى الإِسْلامِ فَأَسْلَمَ، فَقَدِمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا رَآهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَثَبَ إِلَيْهِ فَرَحًا وَمَا عَلَيْهِ رِدَاؤُهُ حَتَّى بَايَعَهُ "، قَالَ مُحَمَّدٌ: إِذَا أَسْلَمَتِ الْمَرْأَةُ وَزَوْجُهَا كَافِرٌ فِي دَارِ الإِسْلامِ لَمْ يُفَرَّقْ بَيْنَهُمَا حَتَّى يُعْرَضَ عَلَى الزَّوْجِ الْإِسْلامُ، فَإِنْ أَسْلَمَ فَهِيَ امْرَأَتُهُ وَإِنْ أَبَى أَنْ يُسْلِمَ فُرِّقَ بَيْنَهُمَا وَكَانَتْ فُرْقَتُهُمَا تَطْلِيقَةً بَائِنَةً، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ وَإِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬০৪
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৪। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আব্দুর রহমান কন্যা (ও মুনযিরের স্ত্রী) হাফসার যখন তৃতীয় হায়েয শুরু হলো, তখন সে ইদ্দাত পালন থেকে উঠে গেলো। আমি (যুহরী) আব্দুর রহমান-কন্যা আমরার কাছে ব্যাপারটি উল্লেখ করলাম। তিনি বলেন, উরওয়া ঠিকই বলেছেন (রিওয়ায়াত করেছেন)। লোকেরা আয়েশা (রাযিঃ)-র সাথে বিতর্কে লিপ্ত হলো এবং বললো, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ 'তিন কুরূ পর্যন্ত বিরত রাখতে হবে'। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, তোমরা সত্যিই বলেছো । কিন্তু তোমরা জানো কুরূ কি? কুরূ বলতে তুহর (পবিত্র অবস্থা) বুঝায় ।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: " انْتَقَلَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ حِينَ دَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنَ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، فَقَالَتْ: صَدَقَ عُرْوَةُ، وَقَدْ جَادَلَهَا فِيهِ نَاسٌ، وَقَالُوا، إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ: {ثَلاثَةَ قُرُوءٍ} ، فَقَالَتْ: صَدَقْتُمْ، وَتَدْرُونَ مَا الأَقْرَاءُ؟ إِنَّمَا الأَقْرَاءُ: الأَطْهَارُ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬০৫
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৫। আবু বাকর ইবনে আব্দুর রহমান ইবনুল হারিছ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনিও এরূপ বলতেন (কুরূ অর্থ তুহর)।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ مِثْلَ ذَلِكَ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬০৬
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৬। সুলায়মান ইবনে ইয়াসার (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। আল-আহওয়াস নামে সিরিয়ার এক ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে তালাক দেয়। তার তৃতীয় হায়েয শুরু হওয়ার পর লোকটি মারা গেলো। মহিলাটি তখন বললো, আমি তার ওয়ারিস। আল-আহওয়াসের ছেলেরা বললো, আপনি তার ওয়ারিস হতে পারেন না। তারা নিজেদের বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য তা আমীর মুআবিয়া (রাযিঃ)-র দরবারে উত্থাপন করলো। মুআবিয়া (রাযিঃ) ফাদালা ইবনে উবাইদ (রাযিঃ)-র কাছে এবং সিরিয়ার কতিপয় লোকের কাছে এর সমাধান জিজ্ঞেস করলেন, কিন্তু এ সম্পর্কিত মাসআলার কোন সদুত্তর তাদের কাছে পাননি। অতঃপর তিনি বিষয়টি যায়েদ ইবনে ছাবিত (রাযিঃ)-কে লিখে জানান । যায়েদ (রাযিঃ) উত্তরে লিখে পাঠান যে, তার যখন তৃতীয় হায়েয শুরু হয়ে গেছে তখন স্বামীর সাথেও তার কোন সম্পর্ক অবশিষ্ট থাকলো না এবং তার সাথে স্বামীরও কোন সম্পর্ক অবশিষ্ট থাকলো না। অতএব দু'জনের কেউই কারো ওয়ারিস হবে না।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، وَزَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّ رَجُلا مِنْ أَهْلِ الشَّامِ يُقَالُ لَهُ: الأَحْوَصُ، طَلَّقَ امْرَأَتَهُ، ثُمَّ مَاتَ حِينَ دَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنَ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ، فَقَالَتْ: أَنَا وَارِثَتُهُ، وَقَالَ بَنُوهُ: لا تَرِثِينَهُ، فَاخْتَصَمُوا إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، فَسَأَلَ مُعَاوِيَةُ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ وَنَاسًا مِنْ أَهْلِ الشَّامِ، فَلَمْ يَجِدْ عِنْدَهُمْ عِلْمًا فِيهِ، فَكَتَبَ إِلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، فَكَتَبَ إِلَيْهِ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ: «أَنَّهَا إِذَا دَخَلَتْ فِي الدَّمِ مِنَ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ فَإِنَّهَا لا تَرِثُهُ، وَلا يَرِثُهَا، وَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ وَبَرِئَ مِنْهَا»
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬০৭
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৭ । নাফে (রাহঃ) ও ইবনে উমার (রাযিঃ)-র সূত্রে অনুরূপ কথাই বর্ণনা করেছেন।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমাদের মতে তৃতীয় হায়েয থেকে পাক হয়ে যাওয়ার এবং গোসল করার পরই ইদ্দাতের মেয়াদ শেষ হয়।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، مِثْلَ ذَلِكَ، قَالَ مُحَمَّدٌ: انْقِضَاءُ الْعِدَّةِ عِنْدَنَا الطَّهَارَةُ مِنَ الدَّمِ مِنَ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ إِذَا اغْتَسَلَتْ مِنْهَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬০৮
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৮। ইবরাহীম নাখঈ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রত্যাহারযোগ্য তালাক দিলো, অতঃপর তাকে এই অবস্থায় রেখে দিলো। এমনকি তার তৃতীয় হায়েযের রক্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সে গোসল করতে গেলো এবং তার পানির নিকটবর্তী হলো। এ সময় তার স্বামী এসে বললো, আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম। স্ত্রীলোকটি এ সম্পর্কে উমার (রাযিঃ)-র কাছে মাসআলা জিজ্ঞেস করলো। তখন তার কাছে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। উমার (রাযিঃ) তাকে বলেন, তোমার রায় বলো। ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! তৃতীয় হায়েয শেষ হওয়ার পর গোসল করার পূর্ব পর্যন্ত সে তাকে রুজু করতে পারবে। উমার (রাযিঃ) বলেন, আমারও এই মত। অতঃপর উমার (রাযিঃ) ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে বলেন, তুমি জ্ঞানে পরিপূর্ণ একটি ঘর।
أَخْبَرَنَا أَبُو حَنِيفَةَ، عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، " أَنَّ رَجُلا طَلَّقَ امْرَأَتَهُ تَطْلِيقَةً يَمْلِكُ الرَّجْعَةَ، ثُمَّ تَرَكَهَا حَتَّى انْقَطَعَ دَمُهَا مِنَ الْحَيْضَةِ الثَّالِثَةِ وَدَخَلَتْ مُغْتَسَلَهَا، وَأَدْنَتْ مَاءَهَا، فَأَتَاهَا فَقَالَ لَهَا: قَدْ رَاجَعْتُكِ، فَسَأَلَتْ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ عَنْ ذَلِكَ وَعِنْدَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ، فَقَالَ عُمَرُ: قُلْ فِيهَا بِرَأْيِكَ، فَقَالَ: أُرَاهُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَحَقَّ بِرَجْعَتِهَا مَا لَمْ تَغْتَسِلْ مِنْ حَيْضَتِهَا الثَّالِثَةِ، فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: وَأَنَا أَرَى ذَلِكَ "، ثُمَّ قَالَ عُمَرُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ: «كُنَيْفٌ مُلِئَ عِلْمًا»
হাদীস নং:৬০৯
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬০৯। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ) বলেন, আলী (রাযিঃ) বলেছেন, তৃতীয় হায়েয শেষ হওয়ার পর গোসল করার পূর্ব পর্যন্ত স্বামী স্ত্রীকে ফেরত নেয়ার অধিকারী ।
أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، قَالَ: قَالَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «هُوَ أَحَقُّ بِهَا حَتَّى تَغْتَسِلَ مِنْ حَيْضَتِهَا الثَّالِثَةِ»
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬১০
স্বামীর আগে স্ত্রী মুসলমান হলে।
৬১০। ইমাম শাবী (রাহঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর ১৩ জন সাহাবী সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, তারা সকলে বলেন, তৃতীয় হায়েয শেষ হওয়ার পর গোসল করার পূর্ব পর্যন্ত স্বামী স্ত্রীকে ফেরত নেয়ার অধিকারী । ঈসা ইবনে আবু ঈসা আল-খায়্যাত (রাহঃ) বলেন, আমি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাবকে বলতে শুনেছি, তৃতীয় হায়েয থেকে পাক হওয়ার পর গোসল করার পূর্ব পর্যন্ত স্বামী স্ত্রীকে রুজু করতে পারে।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা এই মত গ্রহণ করেছি। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও আমাদের অধিকাংশ ফিকহবিদের এটাই সাধারণ মত ।**
أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ أَبِي عِيسَى الْخَيَّاطُ الْمَدِينِيُّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ ثَلاثَةَ عَشَرَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كُلُّهُمْ قَالُوا: " الرَّجُلُ أَحَقُّ بِامْرَأَتِهِ حَتَّى تَغْتَسِلَ مِنْ حَيْضَتِهَا الثَّالِثَةِ، قَالَ عِيسَى: وَسَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيِّبِ، يَقُولُ: الرَّجُلُ أَحَقُّ بِامْرَأَتِهِ حَتَّى تَغْتَسِلَ مِنْ حَيْضَتِهَا الثَّالِثَةِ، قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهَذَا نَأْخُذُ، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ، وَالْعَامَّةِ مِنْ فُقَهَائِنَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান